বন্ধুত্বের নব্য ভার্সন

লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র পারাবত ০৬ আগস্ট, ২০১৪, ১১:৫৬:১১ রাত

বন্ধু ও বন্ধুত্ব আমাদের যাপিত জীবনের

একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধারণ করে আছে৷

সাধারণভাবে বন্ধুত্বে গড়ে উঠে পরস্পরের

মধ্যে কমন পয়েন্ট অব ইন্টারেষ্টিং টাইপের

কিছু জিনিসকে কেন্দ্র করে৷ যেমন কেউ

যদি সোস্যাল এক্টিভিজমকে পছন্দ করে তার

বন্ধুতের গাঢ়ত্ব তেমনি আরেকজন সোস্যাল

এক্টিভিষ্টকে ঘিরে রচিত হতে পারে৷

আজকে যখন বন্ধুত্ব নিয়ে কথা হচ্ছে,তখন

বন্ধুত্বের অনেক টার্ম তৈরি হয়েছে৷ সেটা আর

নিষ্পাপ বাল্যবন্ধু বা স্কুলবন্ধু

অথবা ছেলে-ছেলে,মেয়ে-মেয়ে বিরাজমান নয়৷

সেটা অনেক মর্ডাণ টার্ম নিয়ে এসেছে,যেমন-

ফেসবুক ফ্রেণ্ড,বয়ফ্রেণ্ড,গার্লফ্রেণ্ড প্রভৃতি৷

বন্ধুত্বের এই টার্মগুলো অনেক সুন্দর,চাকচিক্য

ময় ও মেদবহুল৷ কিন্তু সুন্দরের মতো আপেক্ষিক

একটা জিনিসে ভয়ংকর অনেক কিছুই

থাকতে পারে৷ যেমন সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য

অবলোকন করতে করতে কেউ যদি বনের

অভ্যন্তরে ঢুকার দুঃসাহস

করে,তাহলে হিংস্র জন্তু জানোয়ার

দ্বারা আক্রান্ত হয়ে জীবনটাও

হারাতে পারে৷ তাই এক্ষেত্রে মানুষ বিপদ

হতে পারে এমন রেড এলার্ট

এরিয়া থেকে অনেক দূরে অবস্থান

করে সৌন্দর্য্য অবলোকন করে৷ কোরআন তাই

সৌন্দর্য্যের সীমারেখা আমাদের

জানিয়ে দিয়েছে৷ দিয়েছে কোথায়

গেলে আপনি পবিত্র আর অপবিত্রার পার্থক্য

বিলীন করে দিবেন৷ আর সে হিসেবে বন্ধুত্বের

লেটেষ্ট ভার্সেনের কিছু প্রায়োগিক

টার্মকে আমরা এমনি ভয়ংকর মনে করি৷যেমন

মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ফ্রেন্ড বা ছেলেদের

ক্ষেত্রে গার্লফ্রেন্ড৷ আজকের সমাজের

লিভটুগেদার,পরকীয়াসহ নানারকম

ব্যাভিচার,অনাচার এই লেটেষ্ট

ভার্সনগুলোর বাই প্রোডাক্ট৷

তাছাড়া স্বামী-স্ত্রী'র মতো পবিত্র

ভালোবাসা বা বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এসব

সম্পর্ক তাদের সাংসারিক জীবনের গভীর

ভালোবাসা সেতুবন্ধনে বাঁধাস্বরূপ,ধংস

াত্বক৷

আমরা দেখেছি কারো স্বামী বা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও

সমান্তরাল ভালোবাসার ভিত্তিতে অনেকেই

তার বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের

সাথে সম্পর্ক রাখছে৷ আপনি হয়তো তাদের

একই ছাদের নিচে যুগের যুগ বাস করতে দেখবেন

কিন্তু ঐ সেতুবন্ধনের জায়গাটায়

মরিচা থাকায় সেখানে পবিত্র

জান্নাতি প্রেমের কিছুই দেখতে পারবেন না৷

আর আজকের সংসার ভাঙ্গার অন্যতম

কারণ যে এটা তা তো পত্রিকা খুললেই

দেখা যায়৷ আমরা স্বামী-স্ত্রী'র

সম্পর্ককে একটি নিখাদ ও নিঁখুত বন্ধুত্ব

মনে করি৷ লেটেষ্ট ভার্সনের বন্ধুত্ব এবং তার

প্রভাব সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে এই স্বামী-

স্ত্রী'র নিরেট সম্পর্কের জায়গাগুলোতে৷ এর

প্রভাব কী হতে পারে,তা কিছু উদাহারণের

মধ্যে বুঝার চেষ্টা করব৷ ধরুন, কোন

ব্যক্তি সকালে তার কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার

আগে বাসা থেকে সকালের খাবার

খেয়ে গেল,তারপর সারাদিন বাইরে কিছু

না খেয়ে বাসায় আসলো,তার ক্ষিদা কেমন

হবে সেই ব্যক্তির

চেয়ে যে ব্যক্তি সকালে বাসায় কিছু

খেয়ে গেল,তারপর ফাষ্টফুড, তারপর

কর্মক্ষেত্রে বিরিয়ানী খেয়ে -

দেয়ে বিকালে বাসায় এলো৷ নিশ্চয় প্রথম

ব্যক্তির ক্ষিদাটা বেশি হবে৷ তার

কাছে সামান্য শুটকি বুনা অথবা ডাল-

ভাত অমৃত স্বাদ হয়ে সারাক্ষণ জিহবায়

লেগে থাকবে৷ ঠিক তেমনি যে ব্যক্তিটি তার

কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় তার প্রিয়তম

স্ত্রী'র শেষ হাসিটুকুন বুকে ধারণ

করে বেরিয়েছে,তারপর কোন পরনারীর

দিকে তাকাই নি,তারপর

কর্মক্ষেত্রে যথাসম্ভব পবিত্র

থেকে বিকালে যখন আবার প্রিয়তম স্ত্রী'র

কাছে ফিরে আসে তখন তার স্ত্রী'র

প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ আর

যে ব্যক্তি কর্মক্ষেত্রে বের হয়ে অসংখ্য

সুন্দরী নারীর মুখাবয়ব ঢ্যাব ঢ্যাব

চোখে দর্শন করে,তারপর

কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী নারী কলিগদের কাছ

থেকে রোমান্সের কিছু ফ্লেবার

নিয়ে অথবা রেস্তোরার আলো-

আঁধারিতে কোনো গার্লফ্রেণ্ড নিয়ে ডিনার

অতঃপর বাসায় এসে স্ত্রী'র প্রতি তার

ভালোবাসার প্রকাশ -সেটা কি কখনো এক

হবে?যে কখনো গার্লফ্রেণ্ড এক্সেপ্ট

করে না আর যে করে তাদের উভয়ের স্ত্রী'র

প্রতি ভালোবাসার প্রতিফলন কি এক হবে?

যে দৃষ্টিতে পবিত্রতার দৃশ্য ছায়া ফেলে আর

যার পবিত্র- অপবিত্রের বাধ-বিচার নেই-

তারা কি উভয়ই সমান? জান্নাতি বন্ধুত্বের

নির্ঝরণী কোথায় সতত প্রবাহিত থাকবে?

উত্তর আমাদের বিবেকের অভিধানেই আছে৷

এজন্য আমরা মনে পাশ্চাত্যের এই কালচার

গুলো আমাদের নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য

ক্ষতিকারক৷নিজ হাতে নিজ পায়ে কুড়াল

মারার মতো অবস্থা৷ তাই বন্ধুত্বের

পবিত্রতায় আটপেয়ে অক্টোপাস স্বরূপ বিষময়

বন্ধুত্ব অপাঙ্তেয়৷ যে বন্ধুত্ব সামাজিক দূষণ

তৈরি করে তা বর্জনীয়৷

বিষয়: বিবিধ

১১১০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

251783
০৭ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:৪৫
বাজলবী লিখেছেন : ধর্মীয় অনুশাসন না থাকায় যুব সমাজ অাজ ভিন দেশী অপসংস্কৃতির অাগ্রাসনে ডুবে অাছে। ভালো লাগলো ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File