জাতি গোলকধাঁধাঁয়!
লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ১২ মার্চ, ২০১৩, ০৯:২৮:৩৩ রাত
পৃথিবীর সকল মানুষ নারী-পুরুষ, আবাল বৃদ্ধা বনিতা আপন চিত্ত বিনোদনের জন্য কোনা না কোন কিছু করে থাকেন। কেউ কেউ খেলা-ধুলায়, কেউ পার্কে-বীচে গিয়ে আবার কেউ প্রেয়সীকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে গিয়ে, কেউ বা লং ড্রাইবে বা হোটেল রেস্তঁরায়, কেউ নিজ পরিবারের সাথে সময় কাটিয়ে, তবে বেশির ভাগ লোক ঘরে বা সিনামা হলে নাটক-ফ্লিম দিখে বিনোদন গ্রহণ করেন। এক সময় আমার ফ্লিম দেখার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিল,তবে বাংলা ছবি থেকে হলিউড ও বলিউডের ছবির প্রতি একটু বেশি ছিল । আমাদের দেশের বাংলা ছবি যখন দেখতাম আশে পাশে আরো যারা দেখতো তারা যে চিনটি দেখছে তার পরের চিনটিতে কি দেখাবে তা তারা অনায়াসে বলে দিত, সেটি আবাব এক'শতে এক'শ মিলে যেত।
যারা দেশের খবর রাখে বা নিয়মিত পত্র-পত্রিকা পড়ে তারাও সরকারের অবস্থান, বিরোধিদলের অবস্থান ও দেশের পরিস্থিতি অগ্রিম কিছু না কিছু আন্দাজ করতে পারেন যে, আজকের পর কি হতে যাচ্ছে। তারাও বর্তমানের পরিস্থতিতে গোলধাঁধাঁয় পড়ে গেছেন। আমরা জানি সরকারের শেষ সময়ে সরকার নমনীয় থাকে, বাজেটে ভতুর্কি দিয়ে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাথে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি ভাবে উন্নত রাখা যায় সেদিকে সর্বোচ্চ সর্তক থাকে, রাস্তা-ঘাট পুল কালভার্ট মেরামত ইত্যাদি করে থাকেন।
সরকার পদ্মা সেতু, হলমার্ক ও তাদের যাবতীয় দূর্নীতি ডাকার জন্য ও আগামীতে পুনরায় ক্ষমতায় আসার জন্য জামায়াতকে বিএনপি থেকে আলাদা করতে মানবতা বিরোধি অপরাধের বিচারকে তরান্নিত করেছে, আদালতকে ব্যবহার করে তাদের কয়েকজ নেতাকে যাবতজীবন ও ফাঁসি রায় ঘোষনা করেছে, নিজের গা থেকে দায় সরাতে শাহবাগের নাটক সাজিয়েছে, সর্বপোরি তাদেরকে নিষিদ্ধ করার যাবতীয় প্রকিয়াও সম্পূর্ণ করেছে, উদ্দেশ্য জামায়াত যেন বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে যায়। অন্যদিকে বিএনপি জামায়াতকে ছাড়তে নারাজ। বিপাকে পড়েছে জামায়াত, জামায়াত বিএনপি না ছাড়লে আওয়ামীলীগের খড়ক। ছাড়লে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে এখনকার যাবতীয় খড়ক মানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে আবার আসবে। আর যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তারাও বিএনপি ছাড়ার অপরাধে খড়কগুলো জামায়াতের উপর চাপাবে। সুতারাং জামায়াত বিএনপি ছাড়বে না। এ বিষয়টি আওয়ামীলীগ ভালই জানে। তার পরও কেন দেশের পরিস্থিতি কমপ্লিকেটেড করছে আমাদের বোধে আসেনা।
শাহবাগিদের দাবি প্রথম প্রথম গনমানুষের দাবী দেশবাসি মনে করেছিল, কিন্তু তাদের আন্দোলন দীর্ঘ হওয়াতে, এটা যে সরকারের সাজানো নাটক জনগনের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শাহবাগিদের পুরো নিয়ন্ত্রন বাম সংগঠন ও নাস্তিকদের হাতে হওয়াতে এবং সরকারের আকুণ্ঠ সর্মথন থাকাতে দেশবাসি দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে।মানুষ আওয়ামীলীগকে ধর্মে বিরোধী পক্ষ হিসাবে চিহ্নত করেছে। অন্যদিকে বিরোধিদলকে দমন নিপিড়ন করে, ও নিরিহ মানুষ হত্যা করে পরিস্থিতি আরো জটিল করে ফেলেছে। ফলে আগামীতে আওয়ামীলী ক্ষমতায় আসা আরো দুরহ হয়েছে পড়েছে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা ভূল করেছেন কি না জানি না। সরকারের দূনীর্তিতে ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ধ গতিতে মানুষ এত বেতৃষ্ণা হয় নাই যে, তারা আবার ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। তারা তো যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি ক্ষমতার শেষে পর্যায়েও আনতে পারতেন। এখন যারা জামায়াতের বিরুদ্ধে হইহুল্লোড় করেছে তাদেরকে তখন উসকে দিতে পারতেন। ফলে জনমত আওয়ামীলীগের পক্ষে হয়তো যেত। সেটা তখন না করে এখন করার অর্থ কি আমরা জানি না। সরকার বিরোধীদলকে যেভাবে দমন নিপিড়ন করছে মনে হয় গৃহ যুদ্ধ লিপ্ত হয়েছে। গত কাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্য্যালয়ে যে ভাবে পুলিশ হামলা করেছে, দরজা ভেঙ্গেছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেফতার করেছে হিন্দী সিনামার একশেনকেও হার মানিয়েছে। কেন বুঝিনাই। আজ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৩ জনকে মুক্তি দিয়ে বাকিদেরকে ২টি মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে, একটিতে শুনানি করে অন্যটির আগামী ২০ তারিখে শুনানির দিন ধার্য্য করেছে। যেহেতু বিরোধীদল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আগামী ১৮ ও ১৯ তারিখে হরতাল ডাক দিয়েছে, সে হরতাল থেকে দেশবাসিকে মুক্তিদিতে আগামী কাল ১৩ তারিখে শুনানি করে তাদেরকে জামিন দিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু সরকার তা করেননি। আমরা জানি না সরকার কেন করেননি। সরকার ইচ্ছে করে পরিস্থিতি জটিল ও গরম করছেন। কিন্তু কেন করছেন সেটা যেমন কারো জানা নাই এবং আগামীতে কি করবে সেটাও কেউ জানে না একটা গোলকধাঁধাঁ। বিশিষ্ট কলামিষ্ট ও সাংবাদিক এবিএম মুছা বলেছেন, " আমি আজ ১ মাস যাবত কোন লেখা লেখতে পারছিনা, কারন আজ যে বিষয় নিয়ে লিখব বলে চিন্তা করছি, কাল আরেকটি বিষয়ের অবতারণা হচ্ছে। অর্থাৎ দিন দিন নিত্যনতুন পট পরিবর্তন হচ্ছে। কি লিখব ভেবেই পাচ্ছি না। বাস্তবে জাতিও ভেবে পাচ্ছে না তারা যে নৌকাতে বসেছে,সে নৌকার পাল তাদেরকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১০০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন