মাতা পুত্র সমাসার

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ০২ আগস্ট, ২০১৩, ০৯:৩২:২০ রাত

প্রতিটি মা আপন সন্তানের প্রতি প্রচন্ড রকম দূর্বল থাকে। সন্তানের সফলতায় মা নিজের সফলতা বোধ করেন এবং সন্তানের ব্যর্থতায় মা সন্তানের চাইতে বেশি ব্যথিত হন। সন্তান যদি কোন খেলায় অন্য কিছুতে বিজয়ী হয়, মা তখন পাড়া-পড়শীদের ফাঁপিয়ে ফুলিয়ে গর্বভরে বর্ণনা করে, যদিও না মা উক্ত খেলার মাথা মুন্ড বুঝেন। সন্তানের সকল কথা বার্তা, পরামর্শ, অন্যায় আবদার মায়েরা আগ্রহ ভরে শুনে, ও কায়মনে পালন করে এবং তাদের সকল ক্রটি, অন্যায় ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন। বাংলাদেশী কোন মায়ের সন্তান যখন ইংরেজীতে কথা বলে মা তখন খুশিতে আটখানা হয়ে যান। বিদেশ থেকে পড়ে আসা সন্তান যখন সেই দেশী কালচারে অভ্যস্ত দেখেন, মা অহংবোধ করেন এবং খুশিতে গদগদ হন। যেহেতু আমরা গরিব দেশে জনগন তাই বিদেশীকে বড় করে দেখি। যদি গরিব দেশের কোন জনতা কোন বিদেশিনীকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন তাহলেতো মায়ের খুশির ইয়ত্তা থাকেনা, বড়াইয়ের দর ধরে না। চাই সেই মা প্রধান মন্ত্রী হন বা আবুলের মা হন।

আমাদের ভাইয়া শৈশব থেকে যুবক হয়েছে সেই সুদুর ইংলেন্ডে। বন্ধু বান্ধব সবই বিদেশি। গায়ের পোশাকাশাক, ফারপিউম ইত্যাদি সবই বিদেশি। বিদেশি টয়লেটে ভাইয়া খাড়াইয়া পেচ্চাব করেন। দেশের মানুষতো বসে বসে করে। পত্রিকা পড়তে পড়তে ভাইয়া অনেক সময় নিয়ে বিষ্টা ছাড়েন। আমাদের মা গর্বে মচকি হাসেন। আমাকে এ সব কথা বলেছেন বিদেশি মুবি। ভাইয়া ইংলেন্ডে থাকতে দেশীয় মেয়েকে অপাতেংকেয় করতেন, তাই ভাইয়া এক আইনজীবি বিদেশীনিকে বিবাহ করেছেন। দেশের মেয়ে মুখাবয়ব নাকি বিঁদগুটে, তাই তারা বোরকা পরে। এক কথা ভাইয়া বলেছেন। তাই ভাইয়া লাইফে বিদেশীনিই শ্রেয় ভাবেন। তবে বিভিন্ন অন লাইন টেবলেট পত্রিকায় থেকে জেনেছি, ভাইয়া দেশিয় সুধা নিয়েছেন। অন্যদিকে কিছু কিছু আমাদের বুদ্ধিজীবিদের মুখে শুনেছি, আমাদের মাতা নাকি দাম্ভিক অহংকারী ও কিছুটা নির্বোধ। অবশ্য দাম্ভিক অহংকারীরা কিছুটা নির্বোধ হয়েই। ভাইয়া বিদেশে আই মিন ডিজিটাল দেশে থাকেন। তাই আমাদের মাতাকে যে দেশে বিদ্যুত যায় না মাঝে মাঝে আসে, সেই দেশে ডিজিটাল দেশের কনসেপ্ট দিয়েছেন। এই কথা আমাদের মাতার মুখে শুনেছি। আমরাতো অন্ধকারে থাকি, টিমটিম বাতির নিচে পড়ালেখা করেছি, তাই ভেবেছি ডিজিটাল আলোর মধ্যে লেখাপড়া করতে পারব, কাজ কাম করতে পারব। তাই মায়ের কথা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। অবশ্য সন্তানেরা মায়ের কথা কম শুনে। পরে দেখি শুধু সময়টা ডিজিটাল হয়েছে আর কিচ্ছু ডিজিটাল হয় নাই। আমাদের মাতাজান শুধু ভাইয়ার কথা শুনেন, আমাদের কথা শুনেন না। ভাইয়া বিদেশ থেকে আইছেন , তাই আম্মাজান ভাইয়াকে প্রধান্য দেন। আমাদেরকে মূল্যায়ন করেন না।

বর্তমানে ভাইয়া দেশে আইছেন। আগে দেশের ভাত তরকারী খান নাই, গাঁও গ্রামে যান নাই। ভাইয়ার বাঙ্গালীর সাথে সম্পর্ক আছে, বাংলাদেশীর সাথে তেমন সম্পর্ক নাই। তাই ভাইয়ার কথায় বির্তক সৃষ্টি হচ্ছে। আগে ভাইয়া আমাদের মাতাকে ডিজিটাল কনসেপ্ট দিছিল, বর্তমানে ইসলামী কালচার, ইসলামী দল ও সংগঠন বন্ধ করার কনসেপ্ট দিছে। রাস্তা সুগম করার জন্য। সম্প্রতি ভাইয়ার কনসেপ্টের কাজ শুরু হয়েছে। আমি মাতা ও ভাইয়ার দারুন ভক্ত। তাই বলছি, দেশের জনগন এই কনসেপ্ট চায় না। দেশবাসি পক্ষ থেকে বিনীত নিবেদন করছি।

শ্রদ্ধেয়া মাতাজান ও প্রয়ি ভাইয়া সমিপেষু

সবিনয় নিবেদন এই যে, দেশের জনগন সকালে ফজরের আজান শুনে ঘুম থেকে জাগে। সকালের জলখাবার খেয়ে কাজে যায় আবার আসরের আজান শুনে কাজ থেকে ঘরে আসে এবং এশার আজান শুনে ঘুমায়। ধর্ম ও ইসলাম মানুষের সুপ্রিয় হৃদয়ের ধন। আল্লাহর দোহাই,দেশের মানুষ এই ধন কেড়ে নিবেন না। তাহলে আল্লাহ আপনাকে ও ভাইয়াকে উত্তম জাজা দিবেন। ইতি০১/০৮/২০১৩ইং

নিবেদক-

আপনার পরিবারে অপাতেংকেয় সদস্য

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File