হেফাজত বনাম রেশমা নাটক
লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ১২ মে, ২০১৩, ১১:১৮:২৩ সকাল
আমরা বাংলাদেশীরা সহজে অনেক কিছু ভূলে যাই। তাই সরকার বলেন, বিদেশিরা বলেন সেই ভূলে যাওয়াকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থ হাসিল করে নেয়। আমাদের সাকেব রেল মন্ত্রী সুরঞ্জিত বাবুর দূর্নীতি প্রকাশ পাওয়ার পর দেশে বিদেশে হৈচৈ পড়ে যায়, সেই হৈচৈ কে ডাকা দিতে ইলিয়াছ আলীকে গুম করেছে। রানা প্লাজার ট্রেজেডি ছিল বাংলাদেরশ স্মরণকালের বড় রকমের দুরঘটনা। যার ফলে সরকার দেশে বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা সম্মুখিন হয়, এমনকি বিশ্বে বড় বড় ভায়াররা বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস সামগ্রী না নেয়ার সিদ্ধান্তে উপনিত হবেন হয় তখন সরকারের এই ঘটনাটিকে ডাকা দেওয়ার একটি ইস্যু প্রয়োজন ছিল। তাই সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারার সিদ্ধান্ত নেয় ।(১) বিশ্ব বাসির মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে দেয়। (২) হেফাজতরে ইতিহাস খতম করা । না হলে ঢাকতে হেফাজতকে তাদের অবোরধ কর্মসূচী পালনের পর তাদেরকে মতিঝিল শাপলা চত্তরে ডেকে আনার প্রয়োজন কি?আমরা জানি হেফাজতের সমাবেশ করার কর্মসূচী ছিল না। হঠাৎ সিদ্ধান্ত হয়।
ইতিপূর্বে হেফাজতকে সরকারের ভাগে আনতে সরকারের অনেক মন্ত্রী এমপি ও পুলিশ কমিশনারসহ অনেক সোর্চ ব্যবহার করে ব্যর্থ হয়েছে এবং কওমী মাদ্রসার শিক্ষার সিকৃতিও দিবে বলে টোপ দিয়েছে। তারা যখন দেখলো হেফাজত তাদের ভাগে আসছে না, তখন তাদেরকে ঢাকায় মতিঝিলে স্বাগত জানালো। বিশ্বাস করার য়ায়! যাদের আন্দোলনকে দমানো জন্য এত পরিশ্রম এত অর্থ ব্যয়, এত মারামারি, হত্যা, গুম, গুলি, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেট ইত্যাদি ব্যবহার তাদেরকে সরকার আবার সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে, ভাবতেই অবাক লাগে। ৬ই এপ্রিল যখন হেফাজত লং মার্চ করছে তখন সরকার ভয় পেয়েছিল, হেফাজত শাহবাগিদের মত বসে যাবে কি না। বসে গেলে তো হটানো মুশকিল ছিল।কারন তখন পরিস্থিতি আরো গরম ছিল। ৫ মার্চ ২০১৩ইং তারিখে হেফাজতকে মতিঝিল স্বাগত জানিয়ে তাদেরকে বির্তকিত করার সরকারের মূল উদ্দ্যেশ ছিল।
তারা লাখের সংখ্যায় সায়েদাবাদ থেকে শাপলা চত্বর, দিলকুশা থেকে শাপলা চত্বর, কমলাপুর থেকে শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা-ফকিরাপুল থেকে শাপলা চত্বর ইত্যাদি সড়কে আধাদিন ও প্রায় একরাতভর অবস্তান করলেও এসব এলাকায় কোন লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর প্রভৃতি ঘটেনি। শাপলার আশপাশে শত সহ¯্র ব্যাংক, বীমা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের ছোঁয়াও লাগেনি। কিন্তু কিয়ামত সংঘটিত হয়েছে কেবল ওসব জায়গায় যেখানে হেফাজতের লোকজন সমবেতও হয়নি কিংবা পারতপক্ষে যাতায়াতও করেনি। হেফাজতের যেসব কর্মী বা সমর্থক কিংবা সাধারণ জনতা সরকারি অনুমোদন রয়েছে বলে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, পল্টন, বিজয়নগর হয়ে মতিঝিল আসার চেষ্টা করে কিছু পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ বিনা উস্কানিতে তাদের উপর হামলা করে ও গুলি চালায়, মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, কিছু যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হেফাজতের উপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। গুলিতে আহত বা ভীত-সন্ত্রস্ত নিরপরাধ হেফাজত সমর্থকদের পৈশাচিকভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।এদের কেউ কেউ অস্ত্র হাতে মুসল্লিদের উপর গুলি চালায় পুলিশ এদের কিছু বলেনি দেখে মনে হয়েছে পুলিশ আর এরা একই মিশনে মিলেমিশে কাজ করছে। কিন্তু এক, দেড়শ’ গজ দূরেই হেফাজতের ১০ লক্ষ কর্মী ঐ এলাকায় গিয়ে পাল্টা হামলা করেনি। তারা শান্তি বজায় রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু যত বেলা গড়াচ্ছে তত পরিকল্পিত সহিংসতা বেড়েই চলছে, দেখা গেল আসরের পরে ইলেক্ট্রিক করাতে বিজয় নগরে বিশালসব গাছ কেটেছে, পল্টনে আইল্যান্ড ভেঙেছে, বঙ্গবন্ধু স্টোডিয়ামের ভেতর মারাত্মক ধরনের ভাঙচুর করেছে, বায়তুল মোকাররম মসজিদের সম্প্রসারিত অংশে আগুন দিয়েছে, ফুটপাতে রক্ষিত বই দোকান ও পসরা জ্বালিয়ে দিয়েছে, সোনার দোকানে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, কলাপসিবল গেটে অগ্নিসংযোগ করেছে। দোকান ও পসরায় ধর্মীয় পুস্তকও ছিল। আগুনে সেসবও পুড়ে যায়। পুড়ে কোরআন, হাদীস ও ইসলামী গ্রন্থ।অন্যদিকে মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ সুন্দর চলছে, বক্তারা বক্তৃতা দিচ্ছেন, আর এ ঘটনাগুলো হেফাজতের সমাবেশ থেকে অনেক দুরে। যদি হেফাজত ঐসব সহিংসতা করতো তাহলে তারা মতিঝিলে করতো। জায়গাটি তাদের দখলে ছিল, ঐ এলাকটি ছিল কর্পোরেট এলাকা। মোদ্দা কথা সুপরিকল্পিত ভাবে হেফাজতকে মতিঝিল এনে তাদের ইতিহাস খতম করার জন্য সরকার এসব কিচ্ছা কাহিনী। অন্যদিকে হেফাজতে থাকা ইসলামীদলগুলো যারা ১৮ দলে আছে, তাদের মাধ্যমে বিএনপি সরকার পতনের নাটকও সাজিয়ে ফেলে। এ বিষয়টি সরকার যখন জানলো, তখন সরকার তাদের কর্মীদের দিয়ে সহিংসতার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিল। যেন সকল দোষ হয় হেফাজতের। সে নিরিখে সৈয়দ আশ্রাফ সংবাদ সম্মেলন ডেকে হুশিয়ার করে দিলেন, সমাবেশ শেষ করে যদি ঢাকা না ত্যাগ করেন, তাহলে কঠো্র হস্তে দমন করা হবে। সৈদয় আশ্রাফ দমন করলেনও রাতে টিভির সম্প্রচার ও বিদ্যুত বন্ধ করে গনহত্যা চালিয়ে। গভীর রাতে ঘুমে আচ্ছান্ন নিরহ, নিরস্ত্র দেশের আলেম ওলামাদের হত্য করে। তাদের লাশ গুম করে । বাহ্ বাহবা। সরকার বটে।
এ নিয়ে দেশে বিদেশে সমালোচনা হচ্ছে তখন (আমার ধারণা) সরকার রেশমাকে আমাদের চোখে চশমা দিতে নিয়ে এসেছে। আমার মনে হয়না রেশমাকে ১৭ দিন যাবত ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১৭ দিনে কাপড় ময়লা হয় নাই, চেহারাও ভাঙ্গে নাই, ক্ষুধায় অজ্ঞানও হয় নাই, লাশের গন্ধে অসুস্থও হয় নাই।হাতের নোখও বড় হয় নাই। বাহির করার পর সবার সাথে দিব্যি কথাও বলছে, দিনের আলোয় তার কোন অসুবিদেও হচ্ছে না।উদ্ধার হবার পর মানুষ বলে মা-বাবাকে, ছেলে সন্তানকে বা ভাই বোন আত্নীয় স্বজনকে দেখবে রেশমার তাদের দেখার প্রয়োজন নাই তাই সে সরাসরি তার খালা প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চায়, খালা ও কালক্ষেপন না করে সকল কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে ভাগিনীকে দেখতে সিএমএইচ ভৌঁ দৌড়। সে বলেছে এতদিন শুকনো খাবার আর পানি খেয়ে খেয়ে বেচেছিল। সেখানে শুকনো খাবার পানি কে রেখেছিল? যদি থেকে থাকে তবে বভনের বেইজভেন্ডের মসজিদে! কে রাখলো? তাছাড়া ১৭ দিনের খাবার!!! নাকি আল্লামা শফি সাহেব, তিনিতো হেফাজত কর্মীদের শুকনো খাবার নিয়ে যেতে বলেছিলেন। ধ্বংষের সময় একজন মহিলা মসজিদে কি করছিল? হতে পারে আল্লাহ মসজিদে থাকার কারনে বাঁচিয়েছেন। সিএমএইচ এর এক সেনাবাহিনীর ডাক্তার মুন্নি সাহাকে বলছেন, রেশমা নাকি তার মল মূত্র বক্ষণ করেছে। তাহালো তার কাপড় নোংরা নাই কেন। রেশমার সাথে নেতারা কথা বলেছেন, মিডিয়ার কোন কর্মীকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। কারনে তখনো তাকে সকল কথা শিখিয়ে দেয়া হয়নি।সামাজিক মিডিয়াগুলোতে তাকে ইডেন কলেজের ছাত্রী, কেউ শাহবাগীদের প্রতিবাদি কন্য বলছেন, তবে আমার তা মনে হয়না। আমার মনে হয় সেই ভবন থেকে আগে উদ্ধারকৃত কোন গার্মেন্টস কর্মী । সর্বোপরি আল্লাহ ভাল জানেন। আমার দৃষ্টিতে শেখ হাসিনার সরকার দেশবাসির দৃষ্টি মতিঝিল শাপলা থেকে রেশমাতে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। মুরহম শেখ মজিব ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলে কথা।
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন