এক ইংলিশ বৃদ্ধ রুগী, তার ইংলিশ যুবতী নার্স আর ছোট ভাইটির ইসলাম গ্রহণের চিত্তাকর্ষক কাহিনী। মরহুম রুগী ও মরহুম নার্সটির জন্য দোওয়া করবেন প্লিজ।
লিখেছেন লিখেছেন হককথা ০৭ জুন, ২০১৪, ০৫:৪৭:৫৩ বিকাল
আমার নাম ক্লেয়ার, ২৩ বসর বয়সের একজন ইংরেজ যুবতী, পেশায় নার্স, সবেমাত্র ইউনিভার্সিটি থেকে নার্সিং গ্রাজুয়েশন শেষ করে বেরিয়েছি। একটা চাকুরির খুব প্রয়োজন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চাকুরীর আবেদন করে অপেক্ষা করছিলাম ইন্টারভিউ-এর জন্য। এরই মধ্যে এক এজেন্সী থেকে ডাক আসলো নার্সিং হোম-এর জন্য, নার্স প্রয়োজন। রাজী হয়ে গেলাম এবং কাজও শুরু করলাম।
প্রথম দিনই আমাকে আমার রুগীর ব্যপারে সমস্ত তথ্য ও কেয়ার প্লানগুলো দেয়া হলো। রুগী প্রায় ৮০ বসরের একজন ইংরেজ বৃদ্ধ, যিনি বাধ্যর্কজনিত রোগ এবং সেই সাথে স্মৃতিভ্রম তথা Dementia ‘য় আক্রান্ত হয়ে অনেকটা পঙ্গু। প্রথম পরিচয়েই শরীরের একটি পাশ অবসাদে দূর্বল, সৌম্যদর্শন স্বল্পভাষী এ প্রৌঢ়ের প্রতি কেমন একটা মায়া জন্মে গেল। তিনি সাদা চামড়ার ইংরেজ হলেও কয়েক বসর আগে ধর্মান্তর করে মুসলমান হয়েছেন।
তথ্যাটি জানার পরে আমি এটা ধারনা করে নিয়েছিলাম যে তার চিকি’সা সেবার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ নিয়ম নীতির মুখোমুখি হতে পারি, তবে সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা ছিল না। তার জীবনযাত্রা ও হালাল খাবার দাবারের ব্যপারে একটা ধারনা পেলাম কিছু পড়া শোনার মাধ্যমে। একজন নিষ্ঠাবান মুসলমান হিসেবে তার বিশেষ জীবনাচার, হালাল খাবার, পানীয় ও পারসোনাল হাইজিনের ব্যাপারে কঠোর নজর রাখলাম। আমার অন্যান্য সহকর্মীরা (কেয়ার এ্যসিষ্ট্যান্ট) ভেবেই পাচ্ছিলেন না, ডিমেনশিয়া আক্রান্ত একজন বৃদ্ধের জন্য এত ব্যতিক্রমতায় ভরপুর আয়োজন কেন? কিন্তু আমার বিশ্বাস, একজন মানুষ যখন জন্মসুত্রে পাওয়া নিজ ধর্মকে ত্যাগ করে নতুন কোনো ধর্ম গ্রহণ করেন, তখন সেই নতুন ধর্মের প্রতি স্বভাবতই তিনি নিষ্ঠাবান হন। এ বিশ্বাস থেকেই বৃদ্ধের ধর্মীয় বিশ্বাস ও স্বাতন্ত্রতা রক্ষায় দৃড় থাকলাম। এভাবেই চলতে থাকলো।
কিছুদিনেই লক্ষ্য করলাম, বৃদ্ধ কেমন যেন আচরণ করেন, বিশেষ ধরনের শারিরীক মুভমেন্ট‘ও করেন। আমি এর কোনো কারণ খুজে পেলাম না, বুঝতেও পারলাম না। ডিমনেশিয়া আক্রান্তরা রোগের ব্যাপকতা অনুযায়ী কখনও কখনও পুরোপুরি স্মৃতিভ্রম হয়ে পড়েন। সবকিছুই তারা ভুলে যান, এমনকি তার নিজের আত্বীয় স্বজন, বাড়ী-ঘর-ঠিকানা, পরিবার-পরিজন সব কিছুই! তারা যখন যা দেখেন, সে সবের মধ্য থেকে কোনো আচার-আচরণ, কোনো কথা-বার্তাকে কপি করেন এবং তা বার বার রিপিট করে চলেন নিজেদের অজান্তেই। আমার রুগীর ডিমেনশিয়াও মারাত্বক ধরনের অগ্রসর পর্যায়ের। তিনি সবকিছুই ভুলেছেন, তার স্মৃতি শক্তি নেই বললেই চলে। তাই ভাবলাম কোথাও কারো আচরণের কোন বিশেষ ধরণটাকে তিনি অনুকরণও বার বার রিপিট করছেন নিজের অজান্তেই।
এমনটা ভেবে প্রথম প্রথম তার এই অদ্ভুত আচরণ ও শারীরিক মুভমেন্টকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আরও কিছু আমার নজরে পড়তে শুরু করলো; তিনি এই বিশেষ আচরণ ও শারীরিক মুভমেন্টগুলো করেন দিনের বিশেষ বিশেষ সময়ে; সকালে, দুপুরে, পড়ন্ত বিকেলে, সন্ধায়, সন্ধার পরে এবং তা প্রতিদিনই ঐ এই সময়গুলোতেই। দূর্বোধ্য শারীরিক মুভমেন্ট, নড়া চড়া! হাত উপরে তোলা, কুঁজো হবার মত করে নত হওয়া, মাথা মাটিতে ঠেকানো, সে সাথে দুর্বোধ্য কোনো ভাষায় কিছু আওড়াতেন জড়িয়ে যাওয়া কন্ঠে, যার কিছুই বুঝতাম না। অথচ তার নিজের এবং আমার; আমাদের উভয়ের মাতৃভাষা ইংরেজি! কেমন যেন অদ্ভূত ভাষা, শুনতেও অদ্ভুত! জড়িয়ে যাওয়া কন্ঠে তিনি প্রতিদিনই প্রায় একই কথা বার্তা একই ভংগীতে আওড়াতেন।
আরও একটা বিষয় আমাকে বিষ্মিত করেছিল। আমি আমার কাজ-কর্ম, লেখা-লেখি সব কিছ্ইু বাম হাতে করতে স্বচ্ছন্দবোধ করি সেই জন্মলগ্ন থেকেই। কখনও আমার রুগী এই বৃদ্ধকে বাম হাতে কিছু খাওয়াতে গেলে তিনি তা খেতেন না, মুখেও নিতেন না! কেমন যেন অদ্ভূত সব ঠেকে আমার কাছে! আমার মনে প্রশ্ন দেখা দিল; আচ্ছা, এসব আচার আচরণ কী ঐ বৃদ্ধের ধর্ম; ইসলামের সাথে সম্পর্কিত?
এরকম প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য ব্যগ্র হয়ে শেষ পর্যন্ত ইউটিউব-এর আশ্রয় নিলাম। সেখানেই কেউ একজন মুসলমানদের নামাজ আদায় করার নিয়ম-নীতি দেখিয়ে একটা ভিডিও পোষ্ট করেছে; তা দেখেই প্রথম তাদের নামাজ সন্মন্ধ্যে জানলাম। ওটা দেখেই বুঝলাম, আমার বৃদ্ধ রুগী প্রতিদিন একই সময়ে বিশেষ ধরনের যে শারীরিক মুভমেন্টগুলো করেন, সেগুলো আসলে মুসলমানদের নামাজ!
বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম অনেকক্ষণ! মাথার ভেতরে যে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল বারবার সেটা হলো, একজন ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রুগী, যিনি নিজের ঘর-সংসার, স্ত্রী-পুত্র-কন্যার নামটি পর্যন্ত ভুলেছেন, নিজের সমাজ-সভ্যতা, দেশটাও ভুলেছেন, সেই তিনিই ভিন্ন ভাষায় এই নামাজ সময়মত আদায় করাটা ভোলেন নি? ভোলেন নি ভিন্ন ভাষার কিছু টেক্সট, যা প্রতিদিনই নামাজে বিড় বিড় করে আওড়ান! নামাজের সময়গুলোও তিনি ঠিক ঠিক মনে করতে পারেন!
এটা কীভাবে সম্ভব? যতই ভাবি, ততই আমার মাথা যেন গুলিয়ে যাবার উপক্রম হয়, এ সব প্রশ্নের কোনো কুল কিনারা করতে পারি না। তবে নিজ ধর্মের প্রতি বৃদ্ধের একাগ্রতা আর নিষ্ঠা দেখে তার প্রতি আমার মায়া আরও বেড়ে গেল। আমি তার পরিচর্যার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হলাম। তার ধর্মানুভতিকে যেন যথাযথ সম্মান করতে পারি, আমার কোনো কাজে যেন বৃদ্ধের ধর্মানুভূতিতে আঘাত না লাগে সে জন্য ইউটিউবের লিংকগুলো নিয়মিত দেখতে থাকলাম। একবার সেখান থেকেই আমি কুরআনের একটা অংশ, যেখানে মৌমাছি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, আমার আইপডে রেকর্ড করে নিলাম ও বৃদ্ধকে তা শোনালাম।
তিনি তা শুনলেন, তার মাঝে এক অবিশ্বাস্য ধরনের পরিবর্তন হলো! তিনি কখনও হাসলেন, কখনও বা কাঁদলেনও। আমি আরও একবার বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়লাম। ভিন্ন ভাষার কিছু বাক্য ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত স্মৃতিভ্রষ্ট একজন মানুষের মনে এত ব্যাপক রি-এ্যকশন করে কী ভাবে?
ইউটিউব থেকেই কিছুদিনের মধ্যে আরও একটি গ্রুপের খবর পেলাম, যারা অন লাইনে ইসলাম সন্মন্ধ্যে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়, তাদের সাথে যোগ দিলাম। এতদিন আমার রুগীর জন্য তার ধর্মবিশ্বাস ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানার চেষ্টা করেছি, তাকে উত্তম কেয়ার ও চিকিতসা দেবার জন্য, কিন্তু আজ যেন আমার নিজের মনের কৌতুহল মেটাতেই ইসলাম জানতে ইচ্ছা করছে!
আমার বাবা কে? তা জানতাম না, তাকে কখনও দেখিনি, নামও শুনিনি। মা সেই তিন বসর বয়সেই মারা গেছেন। ছোট এক ভাই আর আমি। আমরা মানুষ হয়েছি আমাদের নানা-নানির কাছে, তারাও উভয়ে প্রায় বসর চারেক আগে মারা গেছেন। এখন আমি আর ছোট ভাইটি, আমরা দু‘জন ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। সেও থাকে ভিন্ন এক শহরে। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। নিজেকে সুখীই ভাবতাম।
কিন্তু এই বৃদ্ধের নার্সিং করতে এসে মনে হলো; জীবনের কোথাও যেন একটা শুন্যতা রয়ে গেছে। রয়ে গেছে এক বিরাট অপূর্ণতাও! জীবনে শান্তি আর প্রশান্তির যে অপূর্ণতা, সেটার অভাব বোধ করলাম এ্ই প্রথম। আমার রুগীর কথা মনে পড়ে বারবার। এই বৃদ্ধ এত ভয়ংকর একটা অসুখে ভুগেও কী প্রশান্ত! কি তৃপ্ত! জীবনে এই প্রথম আমি কারো মতো হতে চাইলাম, ঐ বৃদ্ধের মত। তার মত শান্তি, তৃপ্তি আর প্রশান্তিতে ভরপূর একজন মানুষ হবার বড় আগ্রহ জাগলো!
আমি ইসলাম চিনতাম না, জানতামও না। এই রুগীর পরিচর্যা করার আগে জীবনে কোনো দিন কোনো মুসলমানের সংস্পর্শেও আসি নি। আল কুরআানের কোনো বাণীও কোনোদিন শুনিনি। তাই আমি অনলাইনের ঐ সাইটে প্রায়ই বসি, ওদের সাথে যোগ দেই মাঝে মাঝে বিভিন্ন প্রশ্নও করি। একদিন এক মহিলা আমাকে আমারই এলাকার কয়েকটি মসজিদের ঠিকানা দিলেন। সময় করে একদিন সেখানেও গেলাম। যাবার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে দলবদ্ধভাবে নামাজ আদায় করলো তারা। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম। দু‘চোখ ভিজে গেল অশ্রুর ধারায়! কোনো মতেই তা ঠেকাতে পারলাম না।
অনেকের সাথেই কথা বললাম, দু‘একটা প্রশ্ন করেছি। তারা খুব সুন্দর করে জবাব দিলেন। ইমাম ও তার স্ত্রীও আমার সাথে কথা বললেন। তারা খুব সুন্দর ব্যবহার করলেন। কিছু বই এবং টেপ উপহার দিলেন। এই একটা বিষয় সেই প্রথম থেকেই খেয়াল করছি। অন লাইনে কিংবা সরাসরি স্বাক্ষাতে ওদের যখন প্রশ্ন করি, তখন তারা সংশ্লিষ্ঠ প্রশ্নের এমন যুক্তিপূর্ণ জবাব দেন যে, তা না মেনে কোনো উপায়ই থাকে না। তাদের এই আচরণ আমাকে এর পর বহুবার টেনেছে মসজিদ পানে। প্রতিবারেই মুগ্ধ হয়ে ফিরেছি।
একদিন অনলাইন আলোচনা চলছে। আমিও উপস্থিত। আজ কেবল আলোচনা ও অনান্যদের প্রশ্ন আর সে সবরে উত্তর শুনলাম। নিজে কোনো প্রশ্ন করিনি, কোনো মন্তব্যও করিনি। একজন আলোচক প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন; আমার কোনো প্রশ্ন আছে কি না। বললাম; না, নেই, আলোচিত সব বিষয়গুলোই আমার কাছে পরিষ্কার হয়েছে এবং আমি সেগুলোর সাথে একমত। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন; তা হলে কোন বিষয়টা আপনাকে ইসলামের ঘোষণা দিতে বাধা দিচ্ছে?
অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। তাই তো! আলোচিত প্রতিটি বিষয়কেই যুক্তিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। আমি সে সবের প্রতিটি বিশ্বাসও করি, তা হলে কোন বিষয়টা আমাকে বাধা দিচ্ছে ইসলামের ঘোষণা দিতে? পরদিন ভোরে উঠে আবার গেলাম সেই মসজিদে। ওদের দেখলাম তারা ভোরের নামাজ পড়লো। আমি মন ভরে তা দেখলাম। বাইরে এসে ইমামও আমাকে সেই একই প্রশ্ন করে বসলেন। আমার কাছে এর কোনো উত্তর নেই, কী জবাব দেবো? নিশ্চুপ ফিরে এলাম।
এর পরে একদিন আমার কর্মক্ষেত্রে রুগী, সেই বৃদ্ধকে একদিন খাওয়াচ্ছিলাম। এমন সময়ে তার চোখে চোখ রাখলাম। আচমকা মনের ভেতরে নিজের কাছেই বিষয়টা ধরা দিলো; এত রুগী থাকতে এই বৃদ্ধের নার্সিং-এর দায়িত্ব আমার ঘাড়ে চাপলো কেন? এর মধ্যে কী কোনো বৃহত্তর উদ্দেশ্য আছে? কারো বৃহত্তর কোনো পরিকল্পনা কী রয়েছে এর পেছনে?
পরদিনই আবার গেলাম মসজিদে। আজ আর কোনো দ্বিধা নেই, জড়তাও নেই। ইমামকে সরাসরি বলাম আমি শাহাদা‘র ঘোষণা দিতে চাই। তিনি আমাকে সাহায্য করলেন শাহাদা ঘোষণা দিতে। আমি উচ্চারণ করলাম সেই মহান বাণী, ঘোষণা দিলাম; আশ শাহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশাহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। আহা! কী যে প্রশান্তি! কী যে একটা খুশীর অনুভূতি সারাটা মনের ভেতরে বয়ে গেল, তা বোঝানের মত কোনো ভাষা আমার জানা নেই।
ওখান থেকে বেরিয়েই ছুটলাম আমার সবচেয়ে আপনজনকে খবরটা দেবার জন্য। না, আমার ছোট ভাইটিকে নয়। আমার রুগী, সেই বৃদ্ধকে! তার ঘরে ঢুকেছি মাত্র, মুখ খোলার আগেই তিনি আমাকে দেখে হেসে উঠলেন, অথচ তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু! বরাবরের মত আবারও বিষ্মিত হলাম! সে দিন তার সামনে দাঁড়িয়ে আমি অঝোরে কেঁদেছি। অনেকক্ষণ কেঁদেছি। আনন্দে, কৃতজ্ঞতায়। তিনিও কেঁদেছেন। এ্ই লোকটা আমার জীবনে এক বিষ্ময়ের পর বিস্ময় জন্ম দিয়ে গেছেন কেবল!!
সেদিনই আমি অন লাইনে লগ-ইন করলাম আরও একবার। অন লাইন বন্ধুদের জানালাম আমার মুসলমান হবার কথা। ওদের সাথে সবাই মিলে আরও একবার শাহাদা পড়লাম। তারা সবাই অপরিচিত নারী পুরুষ। তারপরেও তারা আমাকে নিজের বোনের মত করে আপন করে নিলেন, যেন আমার সত্যিকারের ভাই-বোন। আমার ছোট ভাইটিকেও জানালাম। সে খুশী না হলেও বলল; ‘তোমার জীবন, তুমি স্বিদ্ধান্ত নিয়েছো, আমার কিছু বলার নেই, তবে ভাই হিসেবে তোমার যে কোন প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাবে‘। এর চেয়ে বেশি আর কিই-বা চাইতে পারতাম? আমি ওতেই খুশি।
আমার মুসলমান হবার মাত্র একটি সপ্তাহের মধ্যেই আমার সেই বৃদ্ধ রুগী ইন্তেকাল করলেন। শেষ মহুর্তটি পর্যন্ত আমি তার পাশেই ছিলাম। কী প্রশান্তিময় মৃত্যু! তিনি কেবল আমার রুগী-ই ছিলেন না। তিনি আমার বাবা‘র মত ছিলেন! নিজের বাবাকে জীবনে কোনো দিন দেখিনি, নামটাও তার জানি না। তাকেই বাবার আসনে বসিয়েছিলাম। তিনি কেবল একজন বাবাই ছিলেন না। তিনি আমার ইসলামের উসিলা ছিলেন। তার জন্য প্রতিটি মহুর্ত আমি আল্লাহর কাছে দোওয়া করি। আল্লাহর উপরে তার যে ইমান আর আস্থা ছিল, তার যদি কণাটুকুও আমি পাই, তাতেই আমি খুশি। এর বেশি কিছু চাই না। যতদিন বাঁচি, তার জন্য আল্লাহর কাছে দোওয়া করতেই থাকবো; আল্লাহ যেন তার প্রতি দয়া করেন।
(সুধী পাঠক; এই বোনটির আসল নামটি এখানে বদলে দেয়া হয়েছে। তিনি বিগত ২০১০ সালের অক্টোবরে অল্প বয়সেই ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুর আগ মহুর্ত পর্যন্ত তিনি তার ছোট ভাইটিকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, তার আদরের ছোট ভাইটিও আল্লাহর রহমতে আজ মুসলমান- লেখক)
বিষয়: বিবিধ
১৯৯৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
Amaging . So Good Incident . Thanks Brother.
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন