সহনশীলতা , মিতব্যয়িতা ও বদান্যতার মাধ্যমে একজন মানুষ নিজেকে সৎচরি্ত্রবান করতে পারে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:০৫:৪১ দুপুর
মানুষ হিসেবে আমদের সবাইকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে।সে কারনে আমাদের কাজ হলো সব সময় ভাল কাজ গুলো করা ও অন্যকে উদ্বুদ্ধ করা।আর রোজার মাসে এ ভাল কাজ গুলোর অভ্যাস তৈরি করা যায়।সূরা বনি ইসরাইলের ১১ আ্য়াতে আল্লাহ বলেছেন,মানুষ যেমন মন্দ কাজ করে তেমনি তাদের উচিত ভাল কাজ করার ইছ্ছা করা আর মানুষ সদা ব্যাস্ত সমস্ত।' এ মাসে মানুষ নিজেকে সহনশীল ও মিতব্যয়ি করে তুলবে যেন বছরের অন্যান্য সময়ে এর অনুসরন করতে পারে।পৃথিবীর সব দেশেই ধনী ও গরিবের যে পার্থক্য তার কারন হলো ধনীদের গরীবদের জন্য যা করা উচিত তা তারা করে না।সম্পদের যদি সুষম বন্টন হতো তাহলে গরীব খুঁজে পাওয়া যেতো না।এই রোজার মাস হলো সংযমের মাস।আমরা কি সংযম দেখছি? ধনীরা ইফতারে যেভাবে আপচয় করে তা দিয়ে অনেক গরীব বেঁচে যেতে পারতো।আরব উপদ্বীপে বিশেষ করে খালিজ দেশ গুলোতে যেভাবে খাবারের আপচয় হয় তা দিয়ে অনেক গরীব দেশের মানুষ বাঁচতে পারে।রোজা থেকে আমরা অনেকে শিক্ষা নিতে সক্ষম হি না শুধুমাত্র ক্ষুধার্তই থাকি।রোজার মাধ্যমে আমাদের এই গরীব নিষ্পেষিতদের প্রতি যে দয়ার উদ্রেক হওয়ার কথা তা না হয়ে বরং রোজা আসলে আমাদের প্রতিযুগিতা চলে কে কত বেশি নিজেদের জন্য খরচ করবে।আমরা যদি নিজেদের খরচগুলো কমিয়ে তা গররিবদের মধ্যে বন্টন করি তাহলে অন্তত রোজার মাসে গরীবরা একটু আরামে রোজা পালন করতে পারে।
হজরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত আছে, মহানবী (সা.) বলেছেন—‘একজন মুমিন এক পেটে খায়, আর একজন অবিশ্বাসী সাত পেটে খায়’ (আল-বুখারি)' পরিমিত আহার গ্রহণ করে শরীর সুস্থ রাখা ইসলামের বিধান। আমরা কি তা মানছি? মহানবীর (সা.) নির্দেশ অনুযায়ী সব সময় পেটের তিন ভাগের এক ভাগ অন্তত খালি রাখতে হবে। কম খাওয়া ও কম কথা বলা মানুষকে করে নীরোগ ও সত্যাশ্রয়ী। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘মহানবীর (সা.) জীবনে এমন অবস্থা হয়েছে যে, সাত দিন ধরে আমরা এক টুকরো খেজুর খেয়ে ও পানি পান করে সময় অতিবাহিত করেছি।’ আল্লাহর নবী (সা.) ক্ষুধার তাড়না প্রতিহত করতে তাঁর কোমল পেটে পাথর বেঁধে দিনের পর দিন কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কাউকেও তিনি তা জানতে দেননি। এসব উদাহরণ থেকে এটি স্পষ্ট যে, ইসলাম অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকল্পে কোনো অবস্থায় অপচয় অনুমোদন করে না। বরং অপচয় রোধে সর্বতোভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তার অনুসারীদের উত্সাহিত করে। অপরদিকে পরিমিত আহার গহণ করে ইসলাম সমাজে বিত্তহীন ও বিত্তশালীদের মধ্যে জীবন ধারণের ভারসাম্য বজায় রাখার নির্দেশ দান করে। এটি বিশেষ কোনো মাসের জন্য নয়, বরং সব সময় ও সব অবস্থার জন্য প্রযোজ্য। তবে মাহে রমজানের সিয়ামের অন্তর্নিহিত মর্ম এদিকের ওপরই বেশি গুরুত্ব আরোপ করে।
বিত্তশালীরা রমজান মাসে ক্ষুধার তীব্রতা অনুভব করে তাদের নিরন্ন ভাইদের প্রতি দাক্ষিণ্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে সমাজে অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে—এটিই রমজানের সিয়ামের আবেদন। এই আবেদন উপেক্ষিত হলে তাদের অবশ্যই জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ব্যবসায়ীদেরও একটি বিরাট ভূমিকা আছে। তারা যেন রমজানের মোবারক মাসে আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশায় অধিক মুনাফাখুরি থেকে বিরত থেকে সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ না হয়ে কল্যাণ করতে পারেন, সেদিকে দৃষ্টি দেয়া তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কারণ কিয়ামতের দিনে সত্ ব্যবসায়ী সিদ্দিক ও শহীদদের কাতারে দাঁড়াবেন। পার্থিব জীবনের সামান্য ত্যাগের বিনিময়ে তাদের জন্য এটি কম প্রাপ্তি নয়।
আমাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে।আমরা সবাই যদি রোজার মাসে একটি গরীব প্রতিবেশীকে ইফতারে সম্পৃক্ত করতে পারি তাহলে অনেক গরীবের সমস্যার সমাধান করতে পারি।আর একজন ধনী ইছ্ছে করলে ১০/২০ টা পরিবারেরও দায় বহন করতে পারেন।এটা সম্পুর্ন ইছ্ছার ব্যাপার।শুধু মাত্র ঘটা করে রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ইফতার অনুষ্ঠান না করে সে অর্থ যদি গরীবদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় তাহলেও অনেক অভুক্ত তাদের খাবার পেতে পারে।আমরা নিজেরা কম খেয়ে অন্যদের যদি ভালবাসতে পারি সেটাই হলো উত্তম কাজ।আল্লাহ আমাদের রমজানের মাহাত্ম বুঝার ও বাস্তবে রুপায়ন করার তাওফিক দিন।
বিষয়: বিবিধ
১১১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন