আল্লাহপাক সালাম পৌঁছাতেন খাদিজা (রাঃ)'র কাছে যিনি তাঁর সমস্ত সম্পদ ইসলাম প্রচার-প্রসার এর জন্য ব্যয় করতে থাকেন এবং ব্যয় হয়ে যায় তাঁর সমস্ত সম্পদ।

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:০১:৩৯ সন্ধ্যা

যে কারণে আল্লাহর সালাম পৌঁছাতেন খাদিজা (রাঃ)'র কাছে যিনি তাঁর সমস্ত সম্পদ ইসলাম প্রচার-প্রসার এর জন্য ব্যয় করতে থাকেন এবং ব্যয় হয়ে যায় তাঁর সমস্ত সম্পদ।

আজ হতে ১৪৩৯ বছর আগে এই দিনে (১০ই রমজান, হিজরতের তিন বছর আগে) ইন্তিকাল করেছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)র প্রথম স্ত্রী উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ)।

মানবজাতির মধ্যে চার শ্রেষ্ঠ নারীর মধ্যে অন্যতম হলেন এই মহীয়সী নারী। অন্য তিনজন হলেন নিজ কন্যা হযরত ফাতিমাতুজ্ জাহরা (রাঃ) যিনি সব যুগের নারী জাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ হযরত মরিয়ম (রাঃ) ফেরাউনের স্ত্রী তথা মুসা (রাঃ)র মাতৃতুল্য লালনকারী হযরত আসিয়া (রাঃ)

উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মুসলমান। (যদিও পুরুষদের মধ্যে প্রায় একই সময়ে আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী-(রাঃ) দশ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে তাঁকেও প্রথম মুসলমান ধরা হয়।

বিশ্বনবী (সাঃ)র পেছনে সর্বপ্রথম যে দুই জন জামায়াতে নামাজ আদায় করেছেন তারা হলেন উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ) ও বালক আলী (রাঃ)

খাদিজা (রাঃ) মহান আল্লাহর এতটা নৈকট্য লাভ করেছিলেন যে যখন হযরত জিবরাইল (আঃ) ওহী নিয়ে বিশ্বনবী (সাঃ)’র কাছে নাজেল হতেন তখন তিনি প্রথমে মহান আল্লাহর সালাম পৌঁছে দিতেন এই মহীয়সী নারীর কাছে।

মহানবী (সাঃ)’র সঙ্গে বিবাহিত জীবনের ২৫ বছর কাটিয়েছেন মহীয়সী নারী হযরত খাদিজা (রাঃ)। তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন বিশ্বনবী (সাঃ) অন্য কোনো স্ত্রী গ্রহণ করেননি।

রাসূল (সাঃ)-কে বিয়ের আগেও হযরত খাদিজা (রাঃ) ছিলেন একত্ববাদী ও হযরত ইব্রাহিম (আঃ)’র ধর্মের অনুসারী এবং আরব জাতির মধ্যে সবচেয়ে ধনী মহিলা।

হাজার হাজার উট তাঁর মালিকানাধীন বাণিজ্য-সম্ভার দেশ থেকে দেশে বহন করত বলে ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে। বিশ্বনবী (সাঃ)’র সঙ্গে বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ৪০ বছর (এ সময় তাঁর বয়স আরো কম ছিল বলে কেউ কেউ মনে করেন, তবে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই তাঁর ৪০ বছর বয়স্ক হওয়ার মতটি সমর্থন করেন)।

বিশ্বনবী (সাঃ)’র সঙ্গে বিয়ের ১৫ বছর পর যখন মহান আল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর স্বামীকে নবুওত দান করেন তখন থেকেই উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাHappy নিজের সব সম্পদ বিশ্বজনীন ধর্ম ইসলামের প্রচার-প্রসার ও নও-মুসলিমদের ভরণ-পোষণের কাজে ব্যয় করতে থাকেন এবং ইসলামের পেছনেই ব্যয় হয়ে যায় তাঁর সমস্ত সম্পদ।

ফলে তাঁর ইন্তিকালের পর ইয়াতিম কন্যা ফাতিমা (রাঃ) একটি মুদ্রা পরিমাণ সম্পদও উত্তরাধিকারসূত্রে (মায়ের কাছ থেকে) লাভ করেননি।

ইসলামের শৈশবে এর শত্রু কাফির-মুশরিকরা যখন মুসলমানদের ওপর সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধ আরোপ করে তখন শো’বে আবু তালিব উপত্যকায় দিনের পর দিন অনাহারে থাকতে হয়েছিল উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ)-কে।

ইসলাম প্রচারের প্রথম দিনগুলোতে যখন রাসূল (সাঃ)-কে নানাভাবে অপমান ও ঠাট্টা-বিদ্রূপের শিকার হতে হত এবং তাঁর মাথায় ছাই বা পশুর নাড়ীভুঁড়ি চাপানো থেকে শুরু করে শত্রুরা নবীজিকে (সাঃ)তখন সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী হিসেবে পাশে ছিলেন জীবন-সঙ্গীনি উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ)।

উম্মুল মু’মিনিন খাদিজা (রাHappy’র পবিত্র স্মৃতি যখনই স্মরণে আসত বিশ্বনবী (সাঃ)’র পবিত্র দু চোখ বেয়ে ঝরে পড়ত অশ্রুধারা। অন্য কোনো স্ত্রীই হযরত খাদিজা (রাHappy’র সমকক্ষ নন বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। বিশ্বনবী (সাঃ) খাদিজা (রাHappy বান্ধবীদেরকেও শ্রদ্ধা করতেন।

একবার বিশ্বনবী (সাঃ)’র কোনো এক স্ত্রী নিজেকে হযরত খাদিজা (রাঃ)’র চেয়ে উত্তম বলে দাবি করলে আল্লাহর রাসূল তাকে বলেন: ‘আল্লাহর কসম, মহান আল্লাহ আমাকে তাঁর চেয়ে কোনো উত্তম স্ত্রী দান করেননি।

তিনি আমার প্রতি তখনই ঈমান এনেছিলেন যখন অন্যরা আমাকে বিদ্রূপ করত, তিনি আমাকে তখনই স্বীকৃতি দিয়েছিলেন যখন অন্যরা আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

তিনি তার সম্পদ ব্যয় করেছেন আমার জন্য এবং তাঁর মাধ্যমেই আমি সেইসব সন্তানের অধিকারী হয়েছি যা অন্য কোনো স্ত্রীর মাধ্যমে আমার জন্য নির্ধারিত হয়নি। (বুখারি শরিফ)

যে বছর হযরত খাদিজা (রাHappy ইন্তিকাল করেন সেই বছর ইন্তিকাল করেন রাসূল (সাঃ)’র প্রিয় চাচা ও অভিভাবক হযরত আবু তালিব। তাই এ বছরটিকে ইসলামের ইতিহাসে ‘আ'মুল হোজন’ বা দুঃখের বছর হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১৬১৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

366841
২৩ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৫০
শেখের পোলা লিখেছেন : ধন্যবাদ৷
২৪ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৪৩
304467
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ
366857
২৩ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১০:১১
আবু জান্নাত লিখেছেন : মা-শা আল্লাহ, সুন্দর পোষ্ট, অনেক অনেক ধন্যবাদ।

একটি কথা বুঝে আসেনি:
বিশ্বনবী (সাঃ)র পেছনে সর্বপ্রথম যে দুই জন জামায়াতে নামাজ আদায় করেছেন তারা হলেন উম্মুল মু’মিনিন হযরত খাদিজা (রাঃ) ও বালক আলী (রাঃ)

নামায তো ফরজ হয়েছিল মে'রাজের রাতে। এর আগে তো ফরজ ছিল না, বরং নফল হিসেবে পড়া হতো, তাও একা একা। রাসূল স. হেরা গুহায় নির্জনে ইবাদাত করতেন।

আমার জানা মতে মে'রাজের পর আযান নির্ধারণ করে জামাতের সূচনা হয়।

আপনার উপরোক্ত কথাটি কোথা থেকে নেয়া জানাবেন প্লিজ। ধন্যবাদ
২৪ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৫২
304469
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। যেদুই জনের সাথে জামায়াতে নামাজ পড়ে ছিলেন তা নামাজ পরজ হওয়ার আগের কথা নবীজির পরিবারেই আলী(রাঃ)বড় হয়েছেন মা খাদিজা (রাঃ)এবং নবীজির সাথেই ইবাদতে সামিল থাকতেন।
366864
২৩ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১০:৫৬
আফরা লিখেছেন : হযরত খাদিজা (রাঃ)সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম ।জাজাকাল্লাহ খায়ের ।
২৪ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৫৬
304470
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মা খাদিজা (রাঃ)সর্ম্পকে আরো বেশী বেশী জানা দরকার। আমার আরো বেশী জান্তে ইচ্ছা হয় ধন্যবাদ আপনাকে
367018
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৫৯
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : খুব ভালো লাগলো। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
২৫ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৫:০৮
304567
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
367155
২৬ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১০:৫৪
হাফেজ আহমেদ লিখেছেন : মাশাাআল্লাহ অনেক ভালো লিখেছেন। জাযাকাল্লাহ।
২৬ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:৫৫
304673
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File