১৩ দফা কি! যুক্তরাষ্ট্র তা আগ্রহের সাথে জানতে চায়..!
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৫১:১৪ রাত
হেফাজত নেতৃবৃন্দের সাথে মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তার বৈঠক
১৩ দফা ও ক্বওমী শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারী, হাটহাজারী চট্রগ্রাম।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ক্যাথলিন গিবিলিস্কো এবং সহকারী রাজনীতি বিশেষজ্ঞ লুবাইন চৌধুরী মাসুম হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেছেন।
গতকাল (বুধবার) সকাল ১০টায় মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাদ্বয় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় প্রবেশ করেন।
এসময় হেফাজত নেতৃবৃন্দ তাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে আমীরের কার্যালয়ে নিয়ে যান। এরপর মার্কিন দূতাবাস কর্মকতা হেফাজত নেতৃবৃন্দের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা আনাস মাদানী, আমীরের প্রেস সেক্রেটারী মাওলানা মুনির আহমদ, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা হাবীবুল্লাহ আজাদী, মাওলানা মুজাম্মেল হক প্রমুখ।
বৈঠকে মিসেস ক্যাথলিন হেফাজত নেতৃবৃন্দর কাছে সংগঠনটির ১৩ দফার আন্দোলন, নীতি আদর্শ, সাংগঠনিক তৎপরতা, গত বছরের ৫ই মে শাপলা চত্বরের ঘটনাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ এসব বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনের অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, হেফাজতে ইসলামের তৎপরতা কাউকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য বা নামানোর জন্য নয়।
হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদার সুরক্ষার আন্দোলনের পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করে যাচ্ছে।
হেফাজতে ইসলাম আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামের অবমাননা রোধ, ঈমান-আক্বিদার সুরক্ষাসহ ইসলামী সংস্কৃতির উপর আঘাতহানা যেমন সহ্য করে না, তেমনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে কোন হামলার ঘটনাকেও সমর্থন করে না।
এর বাইরে হেফাজতে ইসলাম কখনোই কোন রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িত হবে না। এ সময় মিসেস ক্যাথলিন শাপলা চত্বরের হতাহতের ঘটনা, বায়তুল মুকাররম এলাকায় পবিত্র কুরআন পোড়ানো এবং সন্ত্রাস ও কথিত জঙ্গীবাদ নিয়েও আলোচনা করেন।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ শাপলা চত্বর এবং পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার করার জন্য সরকারের প্রতি বার বার দাবী জানানোর কথা তুলে ধরে বলেন, শাপলা চত্বরের এত বড় ভয়াবহ ঘটনার পরও সারাদেশে বিশাল জনসমর্থন সত্ত্বেও কোন ধরণের সহিংসতায় না জড়িয়ে আমরা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি।
কারণ, আমরা কখনোই সহিংস পন্থায় দাবী আদায়ে বিশ্বাস করি না। উলামায়ে কেরাম সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জোর-জুলুম, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় মিসেস ক্যাথলিন বলেন, শাপলা চত্বরের ঘটনার সময় আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। পবিত্র কুরআন পোড়ানোর মতো ঘটনার সাথে হেফাজতের লোকজন জড়িত থাকতে পারে এমন অভিযোগ তখন ব্যক্তিগতভাবে আমারও বিশ্বাস হয়নি।
মার্কিন কূটনীতিক দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার পাঠ্য পদ্ধতিসহ কী কী বিষয়ে পড়ানো হয় এবং দেশ ও সমাজ গঠনে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। ক্বওমী শিক্ষা ব্যবস্থা, সরকারী স্বীকৃতি এবং উলামায়ে কেরামের সামাজিক সম্পৃক্ততা সম্পর্কেও তিনি প্রশ্ন করেন।
এ সময় হেফাজত আমীরের প্রেস সেক্রেটারী ও মাসিক মুঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা মুনির আহমদ মিসেস ক্যাথলিনের কাছে বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখ, ক্বওমী মাদ্রাসা ও হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে মার্কিন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মিসেস ক্যাথলিন এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক পরিচালিত মাদ্রাসা সম্পর্কে হেফাজত নেতৃবৃন্দ কতটা অবহিত এবং পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য ক্বওমী মাদ্রাসা নেতৃবৃন্দের কোন প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফরে আগ্রহী কিনা জানতে চান।
হেফাজত আমীরের প্রেস সেক্রেটারী মাওলানা মুনির আহমদ জানান, আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকটি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। বৈঠক শেষে হেফাজত নেতৃবৃন্দ এবং দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আন্তরিক আতিথেয়তা ও সহযোগীতার জন্য মার্কিন কূটনীতিক ধন্যবাদ জানান।
বৈঠক শেষে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিদর্শন বইয়ে মিসেস ক্যাথলিন মন্তব্য লিখেন। বিদায় নেওয়ার আগে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাভবন, ছাত্রাবাসসহ কম্প্যাস পরিদর্শন করেন।
দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে মার্কিন কূটনীতিক দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বিদায় নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৪২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
আজকের এই মিটিং ও ঠিক অনুরূপ আর একটি পাবলিকলী পলিটিক্যাল ব্ল্যাকমেইলিং (যদি না ভুল হয়) - আপনারা যদি বুঝতেন।
আশা করি হেফাজত ইসলাম এর নেতৃবৃন্দ অচিরেই বুঝবেন - কিভাবে তারা স্টাম্পড আউট হয়েছেন এমন ডেলিগেশান রিসিভ করে।
আমার মতে এই ডেলিগেশান এর মাধ্যমে (যা এই পোষ্টে এসেছে)
- হেফাজত মহিলা ইস্যুতে দূর্বলতর হয়েছে বিশেষ করে হিজাবের পলিটিক্যাল ভিউ এর সাথে কম্প্রোমাইজ করেছে - যার পাবলিক ইম্পেক্ট তৈরী হবে ও পাবলিক আলোচনায় আসবে।
- হেফাজত একটি বাংলাদেশী অরাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে আমেরিকার আংগুলির অধীন এমন পাবলিক পারসেপশান তৈরী হবে - যেমনটা বিএনপি ও জামাতে ইসলামীর ব্যাপারে সাধারন মুসলিম এর পারসেপশান।
- ইসলাম বিদ্বেষী ও মুসলিম বিনাশী আমেরিকান পলিসির ব্যাপারে -সাধারন মুসলিম দের মধ্যে যে পারসেপশান তৈরী হয়েছে - তাতে ছিড় ধরবে।
- হেফাজতকে স্ট্রেইট করার জন্য তথা হেফাজতকে দাজ্জালিক রাডারের আওতায় আনা হল - এখন হতে হেফাজত যা কিছুই করুক না কেন - যা কিছুই মিটিং এ আলোচনা করুক না কেন - আমেরিকা তথা এক চোখা দজ্জাল এর উপস্থিতি আছে এমন বিবেচনায় সকল কার্যকলাপ করতে বাধ্য হবে, সারাক্ষন ভাববে - ওনারা কি মনে করবে, কিভাবে এটাকে পারসিভ করবে ইত্যাদি (ঠিক যেমনটি মেয়ে ডেলিগেশান রিসিভ করার সময় ভাবা হয়েছিল) - যতটা না কোরান ও হাদীস রিফ্লেক্ট করবে।
বিদ্রঃ একজন ট্রু মুসলিম হেফাজত এর স্ট্রেংথ ও কোরান হাদীস ভিত্তিক অবস্থান বুঝতে পারতো - যদি ওনারা ডেলিগেশান এর লিস্ট ও এজেন্ডা দেখে - কাউন্টার প্রস্তাব পাঠাতেন - যেখানে ওনারা পুরুষ ডেলিগেশান চাইতে পারতেন।
আর কোন কারনে তা সম্ভব না হলে ওনারা কি বাংলাদেশের কোন মহিলা ওলামা কিংবা মহিলা ডেলিগেশানের সাথে এই ডেলিগেশানের মিটিং করাতে পারতেন না।
এ কমেন্ট কোন ভাবেই কারো প্রতি অসন্মান এক্সপ্রেশান নয়। কমেন্ট টি মূলতঃ ইতোপূর্বে প্রতিরিত মুসলিম এর ভীতি প্রসূত সতর্ক উচ্চারন স্বরূপ।
''আমাদের পোলাপানকে আমরা আপনাদের কাছে পড়তে পাঠাই , গুলি খাওয়ানোর জন্য না ''।
এটাই হেফাজতকে আপোষকামীতায় যেতে উদ্ভুত করেছে ।
হেফাজত হরতাল দেয় , হরতাল বাতিল করে । সমাবেশ দেয় , পরে তা বাতিল করে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন