আইইউবিএটি (International University of Business Agriculture and Technology) তে পাঞ্জাবি-টুপি-বোরখা পরায় পরীক্ষায় ফেল ও ইসলামী পোষাক নিষিদ্ধ ঘোষণা করার কারণ জানতে চাওয়ায় স্বয়ং ভিসি প্রশ্নকারীকে হত্যার হুমকি প্রদান (১ম পর্ব )

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:০৭:৫৭ রাত

ঘটনাটা ২০১২ সালের মার্চ মাসের । নয়াদিগন্ত ও ডেইলিস্টারে খবর প্রকাশ হয় ।




https://www.youtube.com/watch?v=1b_u1kKlDgE&sns=fb

International University of Business Agriculture and Technology- তে পাঞ্জাবি-টুপি-বোরখা পরায় পরীক্ষায় কিছু শিক্ষার্থীকে ফেল করানো হচ্ছে ও ইসলামী পোষাক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিশেষ ধরণের ড্রেস কোড প্রবর্তন করা হয়েছে । আমি তখন চাকুরী ও ব্যবসা বাদ দিয়ে শুধু মাত্র পড়াশোনা করছিলাম । হাতে অফুরন্ত সময় । বিষয়টার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম । তখন সোনারবাংলাদেশ (বন্ধ হয়ে গেছে) ও সামহোয়ার ইন ব্লগে লেখালেখি করতাম । সামহোয়ার ইন ব্লগে কিছু উগ্রপন্হী হিন্দু আমার লেখায় এসে আজে বাজে মন্তব্য করতো ও আমাকে হিন্দু ধর্মগ্রহণ করার আমন্ত্রন জানাতো । এক সময় এই ব্লগের অমুসলিম মালিকের সাথে বিশেষভাবে যোগাযোগ স্হাপন করে আমার সব লেখা মুছে দেয় এবং আমাকে হত্যার হুমকি দেয় । সনাতন ডট কম এবং নষ্টকবি নামক এক হিন্দু ব্লগার এই ক্ষেত্রে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে । এর ফলে এই সাইটে International University of Business Agriculture and Technology নিয়ে তেমন কিছুই লেখতে পারি নাই । এজন্য আমি সোনারবাংলাদেশ ব্লগ সাইটটাতে এই বিষয়ে আমার লেখাটা শেয়ার করছি ।

















এই লক্ষ্যে উত্তরায় বিশ্ববিদ্যালয়টার ক্যাম্পাসে গেলাম । খবর নিয়ে জানলাম - এই বিশ্ববিদ্যালয়টা তাবলীগ জামায়াতের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তাবিত স্হান দখল করে গড়ে উঠেছে । ক্যাম্পাসের কিছু ছাত্রীর সাথে কথা বল্লাম । আমার সামনেই বোরকা পরা এবং সেলোয়ার কামিজ ও আমিরা স্টাইলে হিজাব (মাথা ও বুক ঢাকার জন্য ওড়না পড়ার বিশেষ পদ্ধতি) পরা মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি । আমি দ্বাররক্ষীদের কাছে কারণ জানলে ভীষণ খারাপ ব্যবহার করে । পরবর্তীতে আমি কিছু ছাত্রদের সাথে কথা বলি । তাদের অভিমত : মনযোগ দিয়ে শুনি । কয়েক জনের অভিমত : বিশেষ রাজনৈতিক দল ও মতের লোকরা এসব পোষাক পরে থাকে । এসব পোষাক পরা ছাত্রদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টার ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই নিয়ম করা হয়েছে । এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই । ...আমি তাদের সাথে কোন যুক্তি তর্কে যাইনি ।

এর পরবর্তী কয়েক ঘন্টা আমার জন্য শুভকর হয়নি । বিশ্ববিদ্যালয় হতে কয়েক কিলোমিটার দুরবর্তী ধৈউর নামক স্হানে আমি যখন পৌছাই , তখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ( মূলত সন্ত্রাসী ) আমার গতিরোধ করে । আমার মূলবান ভিডিও ক্যামেরা ও ভয়েস ট্রেসার ছিনিয়ে নেয় । আমি এই বিষয়ে স্বয়ং ভিসির সাথে কথা বলি ফোনে । তিনি আমাকে সরাসরি তার সাথে কথা বলার জন্য আসতে বলেন । আমি অস্বীকৃতি জানাই এবং দাড়ি-টুপি-বোরকা নিষিদ্ধ করণের কারণ এবং কোমলমতি ও পবিত্র ছেলে-মেয়েদের পাশ করার পরও ফেল করানোর কারণ কি জানতে চাই । তিনি এক কথা দুই কথার পর তিনি বলেন, যদি আমি অদুর ভবিষ্যতে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিসীমানায় আসি, তাহরে তিনি হত্যা করে তুরাগ নদীতে আমার লাস ফেলে দিবেন । ....।

আমি আর কথা বড়াইনি । কারণ সময়টা ছিল বেরহম । আমি ধৈর্যধারণ করলাম । আমি নয়া দিগন্তের সাংবাদিক হাসান মেহেদীর সাথে দেখা করলাম । তিনিই সর্বপ্রথম বিষয়টি পত্রিকায় নিয়ে আসেন । তারপর ডেইলী স্টার । তিনি আমাকে নির্যাতনের স্বীকার কিছু ছাত্রের মোবাইল নম্বর দিলেন এবং তাদের কীভাবে ফেল করানো হচ্ছে তার কিছু প্রমাণ দেখালেন । আমি সেগুলো ফটোকপি করে নিলাম । এমন কিছু ছাত্রের সাথে কথা বল্লাম । তাদের অনেকে এই বিষয়টা নিয়ে অগ্রসর হতে আগ্রহী নয় । অনেকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেছে । কেহ আবার দাড়ি টুপি ছেড়ে ক্লাস ও পরীক্ষা দেওয়া শুরু করেছে । আমি অনেক বার চেষ্টা করেছি বোরকা পরা এক মেয়ের সাথে কথা বলার । কিন্তু সে সুযোগ হয়নি । পরে শুনেছি সেই মেয়ে আর কোথাও পড়াশোনা করেননি । তাকে তার বাবা-মা পাত্রস্হ করেছেন । অথচ সেই মেয়েটার রেজাল্ট ভীষণ ভাল ছিল । আমি অনেক বার তার পরিচিতদের বলেছি - তার উপর নির্যাতনের ব্যাপারে তার সোচ্চার হওয়া উচিত এবং তার অভিভাবকদের উচিত প্রতিবাদী হওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ-অণুপ্রেরণা দেওয়া ।

পরবর্তীতে আমি তাবলীগ জামায়াতের এক মুরব্বী ( যাকে নিয়ে বর্তমানে সমস্যা হচ্ছে ও যার ছেলে খিদমাহ হাসপাতালের ডিরেক্টার ) -র সাথে কথা বলি । তিনি আমাকে বলেন যে দাড়ি-টুপি-বোরকা নিয়ে কথা বলার আগে আমার শরীরকে আগে সুন্নতী তরীকায় গড়ে তোলেতে হবে ও সময় যেহেতু আছে সেজন্য আমার চিল্লা দেওয়া উচিত । এই ব্যাপারে তিনি শুধু এতটুকু বলেন - এটা আল্লাহর পক্ষ হতে পরীক্ষা মাত্র । মুমীনদের কাছে দুনিয়া জেলখানা স্বরুপ । যারা এমন অবস্হায় পড়েছে তারা অনত্র পড়লেই পারে । .............। আমি তার এসব কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক হলাম । আমি এটাও বল্লাম যে বিশ্ব ইজতেমার জায়গা দখল করে এই বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে । শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়ই না আরে ৩৫ টা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব ইজতেমার জায়গা কৌশলে দখল করেছে । ............ তিনি এব্যাপারে বল্লেন, তুমি গৃহায়ণ ও গণপুর্ত মন্ত্রনালয় ও টঙ্গি পৌরসভায় কথা বল ।

কয়েক দিন পর নয়া দিগন্তের সাংবাদিক হাসান মেহেদী-র সাথে কথা বলি । তিনি কথা প্রসঙ্গে বলেন যে ছেলেগুলো জামায়াত-শিবিরের কেহ না । সবাই তাবলীগ জামায়াতের ছেলে । আমাদের মালিকপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আর কিছু লেখা হোক - তা চাচ্ছেন না । এর কারণ অনেক । তবে এতটুকু বলছি : জামায়াতের প্রায় সব প্রকাশনাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞাপন থাকে । ................। উপরন্তু নয়াদিগন্তের মালিক নিজে জামায়াত করেন । ..

আমি এসব কথা শোনার পর চরমভাবে হতাশ হলাম । পরবর্তীতে অন্য আরেকটা বিষয়ে হাসান মেহেদীর সাথে কথা বলি ।

আজ এপর্যন্ত ।

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File