২৫ নভেম্বর টিকফা চুক্তির মাধ্যমে আমেরিকার কাছে যেভাবে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশ (কপি পেস্ট)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৩ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:২৩:৪৪ দুপুর


২৫ নভেম্বর আমেরিকার সাথে ‘টিকফা’ নামক চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ চুক্তির শর্তগুলো একটু জটিল হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে তা সহজে বোধগম্য নয়। অনেকে জানেই না, তাদের চোখের সামনে কীভাবে বিক্রি করা হচ্ছে তারা মাতৃভূমিকে। এব্যাপারে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল নিরব ।
আমেরিকা যার বন্ধু হয় তার শত্রুর প্রয়োজন হয় না । - ইরানের বাদশাহ রেজা শাহ পাহলভী ।
আসুন খুব সহজ ভাষায় দেখি টিকফা হলে কি হবে........
১) গ্যাস: বাংলাদেশে বিনা শুল্কে শকুনের মত প্রবেশ করবে শত শত মার্কিন কোম্পানি, দখল করে নেবে পুরো গ্যাস সেক্টর। তাদের সাথে কখনই প্রতিযোগীতায় পেরে উঠবে না সরকারী ও দেশীয় কোম্পানিগুলো। একচ্ছত্র অধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর গ্যাসের দাম এত পরিমাণ বৃদ্ধি করবে যে, তখন বাঙালীরা গ্যাসের উপরে থেকেও রান্নার জন্য সামান্য গ্যাস পাবে না, যেমনি হীরার দেশে থেকেও দু’মুঠো খাবার পায় না সম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্তে বিধ্বস্ত সিয়েরা লিয়নবাসী।
২) বিদ্যুৎ: সরকারি কোম্পানিগুলো পেরে না ওঠায় দেশীয় বিদ্যুৎ বিভাগ চলে যাবে মার্কিনীদের হাতে। তখন আধুনিকায়নের নামে বিদ্যুতের দাম বাড়বে কয়েকগুন। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়া, কিন্তু এ চুক্তি হলে উল্টো উচ্চ বিলের কারণে সুবিধা হারাবে শহুরে জনগণ। তখন দেশে উৎপন্ন বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হবে দেশের বাইরে।
৩) বন্দর: অবাধ বাণিজ্যের নামে বন্দরগুলো অবাধভাবে ব্যবহার করবে মার্কিনীরা। তখন এ বন্দর ব্যবহার করে আমাদের দেশে মার্কিন সেনাবাহিনী ঢুকালো না অস্ত্র ঢুকলো তার কোনো হিসেব নেয়ার ক্ষমতা থাকবে না বাংলাদেশ সরকারের 
সৌদি আরব ও আমেরিকা মুসলিম বিশ্বে কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী নিয়োগ করেছে যাদের কাজ মুসলিমদের বিভ্রান্ত করা যাতে আমেরিকা মুসলিম বিশ্বের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে ও মুসলিম বিশ্বের সম্পদ লুণ্ঠন করতে পারে এবং সোদি আরব তার রাজতান্ত্রিক শাসন অক্ষুন্ন রাখতে পারে । ছবিতে এমনই এক ধর্ম ব্যবসায়ী মতিউর রহমান মাদানী ও তার বিখ্যাত ওয়াজের বিষয়ব্স্তু দেখা যাচ্ছে ।
৪) টেলিযোগযোগ: টেলিযোগাযোগ খাত আগেই বেসরকারিকরণ হওয়ায়, দেশের অনেক গোপন তথ্যই হারিয়েছি আমারা। বিশেষকরে, কোন রাষ্ট্রেই কখন পাশ্ববর্তী দেশের মোবাইল কোম্পানিকে যায়গা দেয়া হয় না, সেখানে ভারতের এয়ারটেল বাংলাদেশে প্রবেশ করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতের নিয়ন্ত্রণে রাখছে। যা আমাদের জন্য খুবই পরিতাপের বিষয়।
তবে এ খাতে মার্কিনীরা প্রবেশ করলে তাদের অধিকতর পোদ্দারিতে অতিষ্ঠ হয়ে ঊঠবে জনগণ, কারণ মার্কিনীদের আড়িপাতার জঘন্য রেকর্ডের জন্য তারা সারা বিশ্বেই কুখ্যাত ।
৫) শিক্ষা: শিক্ষাখাতে মার্কিনীদের প্রবেশ, আর জাতির মেরুদণ্ডকে ড্রোন দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া একই কথা। আধুনিকায়নের কথা বলে সিলেবাসসহ সর্বত্র বাদ দেয়া হবে ইসলামকে, প্ররিষ্ঠানগুলোতে পশ্চিমের মত ধর্ম চর্চা নিষিদ্ধ করা হবে । বিজাতীয় অপসংস্কৃতি দিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। অনেকে বলতে পারেন, এখনই তো অনেকটা হয়ে গেছে, তাদের বলতে চাই: এখন যদি ৫ টাকার ধ্বংস হয়, তবে তখন হবে ৫০ টাকার।
৬) স্বাস্থ্য: সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্বাস্থ্য খাত। ঔষধের গুনগত মানের কথা বলে মার্কিন নীতি চাপিয়ে দেয়া হবে দেশীয় কোম্পানিগুলোর ঘাড়ে। কথিত নীতি বাস্তাবায়ন করতে মারাত্মক বৃদ্ধি পাবে ঔষধের দাম। এখন যদি একপাতা এন্টাসিড কিনতে যদি খরচ হয় ১৫ টাকা, তবে তখন খরচ হবে ১৫০ টাকা। মানুষ সামান্য ঔধের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে। একই সাথে মার্কিন কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে পথে বসে যাবে দেশীয় কোম্পানিগুলো।
৭) পরিবহন সেক্টর: পরিবহণ খাত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সেক্টর। দেশের পরিবহন সেবা না নিয়ে দেশের কোন নাগরিক থাকতে পারে না। দেশের কোটি কোটি জনগণ এ খাতের সাথে জড়িত, এ খাতের আয়ও প্রচুর। কিন্তু মার্কিনীরা এ ছোট্ট দেশে প্রবেশ করলে তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে যেকোন উপায়ে একচ্ছত্র অধিপত্র প্রতিষ্ঠা করবেই, ফলে বাংলাদেশের সমস্ত পরিবহন মালিকদের পথে বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। আর আমাদের টাকা নিজে দেশে নিয়ে যাবে মার্কিনীরা।
মনে রাখবেন এ চুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ ফলাফল হচ্ছে, মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির কাছে পেরে না ওঠায় রাস্তায় বসে যাবে দেশীয় ব্যবসায়ীরা। আর এই সুযোগে একচেটিয়া অধিকার পেয়ে সবকিছুর দাম আকাশে উঠাবে মার্কিনীরা। মূলত: এই কারনেই ভারত ও চীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে টিকফা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়নি।
আমার এ লেখাটা অনেকের কাছে রুপকথার মত মনে হতে পারে, কিন্তু আমি সহজ ভাষায় যা বর্ণনা করতে চেয়েছি পরিস্থিতি তার থেকে অনেক ভয়ঙ্কর হবে।
মূলতঃ এ চুক্তি হচ্ছে বাংলাদেশকে চুষে খেয়ে ভিখারী বানানো একটা পন্থামাত্র। যেমনটা ল্যাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে অবাধ বানিজ্য চুক্তির নামে তাদের পথে বসিয়েছে দিয়েছে আমেরিকা, কিংবা আফ্রিকান দেশগুলোতে ব্যবসার নামে ঢুকে তাদের দুর্ভিক্ত আক্রান্ত করে ছেড়েছে তারা।
তেমনি এই চুক্তির মাধ্যমেও বাংলাদেশকে আফ্রিকা-ল্যাতিন আমেরিকার মত শুষে খাবে আমেরিকা, বানিয়ে দিবে কঙ্কালসার।
সর্বশেষে বলতে চাই, বর্তমানে কথিত সর্বদলীয় সরকার কোন গণতান্ত্রিক সরকার নয়। তাদের নেই কোন সাংবিধানিক ভিত্তি। মূলত অন্তবর্তীকালীন সরকার কখনই ক্ষমতা রাখে না এতবড় একটা চুক্তি করার। তাদের কাজ থাকে সরকারের রুটিন ওয়াইজ কাজগুলো চালিয়ে যাওয়া এবং নির্বাচনের আয়োজন করা, বৈদেশিক চুক্তি সম্পাদন করা নয়। তাই অবিলম্বে এ চুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে তাদের ফিরে আসার কোনই বিকল্প নেই ।
( লেখক : দস্তার রাজদরবার https://www.facebook.com/rajdarbaar )
উপসংহার :
বর্তমানে কথিত সর্বদলীয় সরকার কোন গণতান্ত্রিক সরকার নয়। তাদের নেই কোন সাংবিধানিক ভিত্তি। মূলত অন্তবর্তীকালীন সরকার কখনই ক্ষমতা রাখে না এতবড় একটা চুক্তি করার।এব্যাপারে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল নিরব । এমন কি কথিত ইসলামপন্হি দলগুলোও নিরব । আলেম সমাজও নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে । 
বাংলাদেশের আলেম সমাজ টিকফা চুক্তির বিরুদ্ধে সোচ্ছার হচ্ছে না কেন ? এই চুক্তি হলে বাংলাদেশ বলতে গেলে আমেরিকার অধীন হয়ে যাবে । আমেরিকা যা বলবে আমাদের সরকারকে তাই করতে হবে । 
বিগত দিনের আচরণ হতে প্রমাণিত জামায়াত-শিবির আমেরিকার দালাল ।
চরমোনাই পীর , তেতুল হুজুর (তেতুল তত্ব দেওয়ায় এই নাম হয়েছে) , কওমী মাদ্রাসার হুজুরবৃন্দ এবং অন্যান্য ইসলামী দল কি আমেরিকার দালাল হয়ে গেলো ? আমাদের কি দ্বিতীয় বার মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে । 
ইরাকের সব ইসলামী দল আমেরিকার দালাল এবং তারা শাসন ক্ষমতার অংশীদার । 
ইরাকের কি হয়েছে তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি । লিবিয়ার সব ইসলামী দল ক্ষমতায় । তারাও আমেরিকার দালাল । মূলত লিবিয়ার তেল সম্পদ লুন্ঠনের জন্য গাদ্দাফীক সরানো হয়েছে । মিশরের মুরশীকেও সরানো হয়েছে ইসরাইল ও সৌদি আরবকে নিরাপদ করার জন্য এবং মিশর যাতে শক্তিশালী রাষ্ট্র না হতে পারে । তেতুল হুজুরী সম্প্রদায়ের অভিমত জানতে চাচ্ছি ?
তেতুল হুজুরী আপনাদের তের দফার সাথে আরো এক দফা যোজ করুন । না হলে আমরা ধরে নিবো আপনারা তেতুল নিয়ে ব্যস্ত আছেন । (উপসংহার ফেসবুক হতে প্রাপ্ত ) 
মা-বোনদের বলছি : আপনাদের শত্রু এখন বাড়ির কাছে । আপনারা কি তেতুল হুজুরে তেতুল হয়ে থাকবেন ? ঘরের চার দেওয়ালে আবদ্ধ হয়ে থাকবেন ? এই ছবির ফিলিস্তিনী বোন যিনি ইসরাইলী সৈন্যের ওপর গুলাল দিয়ে পাথর ছুড়ছে তার মতো কি হবেন না ? নাকি আপনারা আপনার শত্রুদের কাছে ইজ্জত বিলাবেন ? 
আমাদের অন্যতম প্রধান শত্রু
বিষয়: বিবিধ
৩৭১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন