বেঁধেছি ঘর জল ও নীলের সঙ্গমে
লিখেছেন লিখেছেন নেক্সাস ০২ জানুয়ারি, ২০১৩, ০১:২০:৩৪ দুপুর
উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু,
যুগ হতে যুগান্তরে,অতলান্ত সাগরে
আমি ঘুরে বেড়িয়েছি শঙ্খচিলের মত;
আমার বাদামী রং ডানায় সভ্যতার
ষড়ভূজ মানচিত্র;
অক্ষীর তিক্ষ্নতায় বিন্যস্ত জনপদ;
দেখেছি ঈশ্বরের বহুরূপী লীলা-
কত আলোক নগরী, সভ্যতার জয়গান
হিমালয় থেকে এন্টার্কটিকা।
তবুও আমি এইখানে-
এই নীল ও জলের সঙ্গমে
পাতি হাসের নরম বুকের স্পর্শ মাখা
নদীর তীরে বেঁধেছি ঘর-
ঘাষফুল বুকে নিয়ে;
যেখানে
একদিন এসেছিল বর্গী আরব বনিক,
ফিরিঙি, পূর্তগীজ আর মোঘল পাঠান
লুটে নিয়ে ছিল মনিমুক্তা, প্রান্তরের নির্যাস
চন্দ্রমল্লিকা আর বাতাবি নেবুর ঘ্রাণ
যেখানে
সজনে পাতার গন্ধে বুঁদ হয়ে থাকা নরম বিকেলে-
উড়ে যায় প্রজাপতি বাবলার বনে,
কামরাঙার নরম শরীরে খেলা করে
মিঠে হলুদ রোদ,
নিশিন্দার বিশুদ্ধ বাতাসে দোল খায়
পোয়াতী ধানের শীষ,
হিজলের ডালে ঘুঘুর প্রণয় উৎসবে
জেগে থাকে উদাস দুপুর,
সরিষার ছবি আঁকা পথে ঘুড়ি উড়ায়
গ্রাম্য কিশোর অনিকেত মেঘের সাথে ।
যেখানে
বিজন প্রদোষে জাগে পিলসুজ,জ্বলে
আঁধারীর বুক চিরে মাটির প্রদীপ নিথর,
জোনাকী'র মিছিলে রাতের ইন্দ্রজাল;
সহস্ত্র নক্ষত্রের কোলাহলে জাগে
শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদ সামিয়ানা পর।
আমি এই সূবর্ন ভূমে এসে
পদ্মা-মেঘনা-সোমেশ্বরীর ঢেউ বিন্যাসে
ভুলিয়াছি আর পৃথিবীর রূপ
আমারে শুধু কাছে ডেকেছে বিস্তৃত ধানক্ষেত,
ধূলি মলিন মেঠোপথ;আমার প্রতিক্ষায়
যেন বহুকাল পড়ে আছে চুপ।
তাই আমি এইখানে
তাঁতের শাড়ির প্রেম আলিঙ্গনে
এই কোজাগরী পূর্নিমার দেশে,
বাবুই পাখির মায়ায় বেঁধেছি ঘর
শ্যামল মৃত্তিকার কোল ভালবেসে।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন