ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ ধর্মকে স্বীকার করেই রাষ্ট্র চালায় কিন্তু ইসলামকে পঙ্গু করতে বাধ্য হয়!
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:০১:৪২ বিকাল
ধর্মনিরপেক্ষ কথাটি খুব সুন্দর আকর্ষণীয় হলেও, এদের চিন্তা ধ্যান-ধারনার সাথে ইসলামের সংঘর্ষ অনিবার্য। ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ভারত সহ কয়েকটি দেশের জন্য সমস্যা হয়নি কেননা হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, জৈন, শিখ, জরথুস্ত সহ সকল ধর্ম ব্যক্তিগত পর্যায়ে পালন করলে চলে। সে সব ধর্ম দাবী করেনা যে তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন মেকানিজম সুচারুরূপে চালাতে পারে।
এক্ষেত্রে ইসলাম ধর্ম ভিন্ন! ইসলাম জীবন সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রের প্রতিটি সমস্যায় নাক গলায়, সেখানে ভূমিকা রাখতে চায়, মতামত পেশ কিংবা মতামত গ্রহণ করতে চাপ প্রয়োগ করে। যার কারণে ক্ষমতাসীন মহলের জন্য এটা বরদাশত করা কঠিন হয়ে যায়।
মুসলিম দেশে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা যখন ক্ষমতা পায়, তখন সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে, প্রথমেই ইসলাম ধর্মের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইসলামী শিক্ষাকে নিরুৎসাহ, স্কুল-মাদ্রাসায় ধর্মীয় বিষয় রাখতে অনীহা, জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণ, বড় বড় ইসলামী সম্মেলন করতে না দেওয়া, ইসলামী স্কলারদের কে হেয় প্রতিপন্ন করা, তাদের চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি বের করে সরকারী ভাবে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করা হয়।
অন্যদিকে জাগতিক শিক্ষিত, দুনিয়ার ধান্ধায় সিদ্ধহস্ত, অযাচারে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের সাথে ইসলাম পালনকারীদের তুলনা করে দেখানো হয়, মুসলমান মানেই গরীব, অসহায়, দীন, হীন জীবন যাপন কারী সম্প্রদায়। আরো বুঝানো হয় এসব দুর্ভোগের মূল কারণ হল ইসলামকে যথাযথ মেনে চলার খেসারত। এতে তরুণেরা প্রভাবিত হয়।
একই সাথে সরকারের পক্ষ অবলম্বনকারী একদল ধর্ম বিক্রয়ী আলেম গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়, তারা সর্বদা সরকারী কাজকে সমর্থন করবে। ধর্মের সাথে রাষ্ট্রকে পৃথক রাখতে তারা নিজেরাই ধর্মীয় পন্ডিত সেজে, আগ্রহী মানুষদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। অর্থ ও ক্ষমতার জন্য এরা চরম অন্ধ হয় এবং নিজ ধর্ম ও জাতির সর্বনাশে মন কাঁদেনা। অথচ এসব আলেমেদেরও মুখে থাকবে দাঁড়ি, পোষাকে হবে মুসলিম, কথায় থাকবে ইসলাম কিন্তু আচরণে হবে পরিপূর্ণ ফাসিক এবং আকিদায় হবে ভয়ানক প্রকৃতির জালিম ও মিথ্যুক!
মূলত ধর্মনিরপেক্ষ মতাবাদ রাষ্ট্রে ধর্মকে অস্বীকার করেনা বরং ধর্মকে স্বীকার করেই রাষ্ট্র চালায় এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রিয় মেকানিজম ব্যবহার করে ইসলাম ধর্মকে পঙ্গু করে রাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ চালু করে। একপর্যায়ে ধর্মের বন্ধনহীন সেই সমাজে নেতারা পরিপূর্ণ নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে বসে।
বৈষয়িক লোভে সকল নেতারা একপর্যায়ে নিজের আসল চেহারা হারিয়ে ফেলে, এবং তাদের শত শত নতুন চেহারার উদ্ভব হয়। ফলে অসহায় জনতা কোনদিন বুঝতে পারেনা তার প্রিয় নেতার আসল চেহারা কোনটি!
পুরো যুবক গোষ্ঠী সমাজের প্রচ্ছন্ন মোহে নৈতিকতা হারিয়ে নিজেদেরকে সে জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়। দিন দিন জাতির নৈতিকতা চরম অধঃপতনে যায়। রাষ্ট্র শক্তি এটাকে সহজ ভাবে নেয় এবং তাতে আরো নতুন উপাদান যোগ করে। নৈতিকতা হীনতাকে মামুলী ব্যাপার ভাবতে থাকে।
এই চরম বিপর্যয় পরিস্থিতিতে এক সময় ধর্ম পালনকারী ব্যক্তিরা সমাজ বিচ্যুত অপ্রয়োজনীয় হাস্যকর জীবে পরিণত হয়। তাদেরকে হয়ত সমাজ বিচ্যুত হতে হয়, নয়ত নিভৃতে বসবাস কারী হতে হয়। সেই সমাজ নৈতিকতাকে তামাশার বিষয় বানিয়ে ফেলে, ধার্মিককে হাস্যকর জীবে পরিণত করে।
অন্যদিকে রাষ্ট্রে ইসলাম ধর্ম বেঁচে থাকে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত বৃদ্ধার ন্যায়। তাই ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রেখে, খুব সহজে রাষ্ট্র থেকে ধর্মের প্রভাব প্রতিপত্তি ধ্বংস করা যায় বলেই, পৃথিবীতে সুবিধাবাদী রাজনীতিবিধদের কাছে ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদের ডিমান্ড অনেক বেশী। এই নীতি বাস্তবায়নে পুঁজি হিসেবে লাগে ধর্মকে সাইজ করার মত সাহসিকতা আর বিচিত্র হঠকারিতা!
বিষয়: বিবিধ
১৬৫২ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ খায়ের
ভয়ানক প্রকৃতির জালিম ও মিথ্যুক!
আলেম গোষ্ঠীর বেপারে আল্লাহ কোরআনে সাবধান করেছেন আমাদেরকে। সুতারাং আমাদেরও উচিত তাদেরকে চিনে নিয়ে সাবদান হওয়া ধন্যবাদ
বড় পরিতাপের বিষয় হল, যে মুসলমানদের নেতৃত্ব তারা দিতে চায়, সে মুসলমানদের চিন্তা, চেতনা, বিশ্বাস, বৈশিষ্ট্য তথা ইসলাম সম্পর্কে মামুলী কোন জ্ঞান নাই। বরং তাঁদের চেয়ে ইসলাম সম্পর্কে বেশী জ্ঞান রাখে ভারতীয় হিন্দুবাদী দল ও তার প্রধান নরেন্দ্র মোদী। অনেক ধন্যবাদ।
সমাজে রাষ্ট্রের পক্ষে তোষামোদকারী আলেম সমাজের যে মুখোশ আপনি তুলে ধরেছেন, সে ব্যাপারে ১০০ ভাগ সহমত। বর্তমান সরকারের আমলেই হেফাজতকে নিয়ে আলেম সমাজের ভিতরের বিভক্তি সেটি-ই প্রকাশ করে।
আরো এমন বিষয় নিয়ে লিখে যান, পড়বার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ধর্ম নিরেপেক্ষতাবাদিরা অবশ্যই কেবলমাত্র ইসলাম ধর্মের বিরোধি কারন ইসলামি মানুষের জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ফিতরাত বা মানব স্বভাব এর উপযোগি কল্যানমুলক নিতি অনুসরন করে। অন্যদিকে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতা বা ইহজাগতিকতা কিছু মানুষকে দেয় সবাইকে শোষন করার সুযোগ। ৭০ বছর ধরে পুরাপুরি ধর্মহিন থাকা সোভিয়েট ইউনিয়ন কি পেরেছে মানুষের সকল সমস্যার সমাধান দিতে??
আপনি কয়েকগুন বেশী দিবেন।
মুসলিম দেশে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা যখন ক্ষমতা পায়, তখন সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে, প্রথমেই ইসলাম ধর্মের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইসলামী শিক্ষাকে নিরুৎসাহ, স্কুল-মাদ্রাসায় ধর্মীয় বিষয় রাখতে অনীহা, জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণ, বড় বড় ইসলামী সম্মেলন করতে না দেওয়া, ইসলামী স্কলারদের কে হেয় প্রতিপন্ন করা, তাদের চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি বের করে সরকারী ভাবে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করা হয়। ..........................
আমাদরে চোখের সামনে হচ্ছে এসব কিন্তু আমাদের মত বোকারা তা বুঝতে অক্ষম! আমরা শুধু অট্টহাসি হেসে ভেতরে ভেতরে নিজের ধ্বংস করি...! উপরে নিজেদেরকে কব...ই চালাক মনে করি!
আর নিজদের মুসলমান দাবি করি।
বদরের প্রান্তরে কঠিন বিপদের সময়েও রাসুল (সাঃ) তার সাহাবীদের এ ধরনের জিকিরে মশগুল থেকে আল্লাহর সাহায্য তালাশ করেনি। অনেক ধন্যবাদ।
শুনতে বা পড়তে যতই যাতনাই হউক - এটাই সত্য উচ্চারণ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন