প্রতিটি মুমিনের ঘর হোক এক একটা শাহবাগ।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৩০:৪৬ দুপুর
প্রতিটি মুমিনের ঘর হোক এক একটা শাহবাগ।
ইসলামী আন্দোলনের নির্দোষ নেতাদের ফাঁসির দাবীতে আজ উত্তাল শাহাবাগ। টানা দশদিন যাবৎ আন্দোলনকারীরা ভিন্নমতাদর্শের কারণে ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের দুনিয়া থেকে চির বিদায় করে দেয়ার জন্য মামু বাড়ির আবদার নিয়ে মঝমা মিলিয়ে নেচে গেয়ে উৎসুক জনতাকে মাতিয়ে রেখেছে। আমি ওদের দোষ দেইনা। ওরা জন্মের পর থেকেই এ লোক গুলো সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা নিয়ে বেড়ে উঠেছে। ওদেরকে শিখান হয়েছে এরা এক একজন নর ঘাতক, ধর্ষক ও লক্ষ লক্ষ বনি আদমের হত্যাকারী। ওরা যেন সঠিক ধারণা না পায় সেজন্য সত্য প্রকাশে আপোষহীন মিডিয়া থেকে ওদের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে রাখা হচ্ছে।
গণতান্ত্রীক দেশে বদ্ধমূল ধারনার কারনে এমন নরঘাতকদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলাই বরং কর্তব্য। অবশ্যই কিছু চক্রান্তকারী আছে তবে তারা লোক চক্ষুর অন্তরালে বসে কল কাঠি নাড়ছে। দুনিয়ার গণতন্ত্র দেখে মেজরিটি তা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে কিনা সেটা বিবেচ্চ নয়। আব্রাহম লিঙ্কন আর ব্রিটিশ ওয়েস্টমিনিস্টারের এ গণতন্ত্রে ইনসাফের স্থান নাই। তাই ওরা ওদের দাবী আদায়ে বদ্ধপরিকর। দাবীটা সংঘত না অসংঘত তা ওদের বিচার্য নয়।
ওদের সাথে ওদের দুনিয়াবী ক্ষমতাসিন প্রভু আছে এবং একই সাথে ওদের উসকে দিচ্ছে বলে ওরা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। ভাবছে ওদের বিজয় সুনিশ্চিৎ। তবে হ্যা ওদের মোকাবেলায় যদি সবাই হাতপা গুটিয়ে বসে থাকে তাহলে কেউই ওদের বিজয় ঠেকানোর জন্য এগিয়ে আসবেনা। এমনকি মুমিনদের প্রভূও না। কারণ মুমিনদের প্রভূ সেই জাতিকে সাহায্য করেনা যারা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করা থেকে বিরত থাকে, যারা নিজেদের মধ্যে বিভেদ করে, ছোট ছোট মত পার্থক্যের কারনে শতধা বিভক্ত থাকে, হেন স্বার্থের জন্য ইসলাম বিরোধী শক্তির সাথে হাত মিলায়।
যারা নিজেদেরকে মুমিন দাবী করে, চায় আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দীন কায়েম হোক, কায়েম হোক ইনসাফপূর্ণ পরামর্শ ভিত্তিক (গণতান্ত্রীক) সমাজ, তাদের কি কিছুই করনীয় নাই? তারা কি পারেনা তাদের প্রভুর কাছে ধর্ণা দিতে? তাদের প্রভূ তো মহা পরাক্রমসালী। তাহলে ভয় কিসের? তাদের প্রভূতো প্রকাশ্যে বল্লেও শোনে আবার গোপনে বল্লেও শোনে এমনকি মনে মনে বল্লেও শোনে। তাহলে নিশ্চুপ কেন? হয়ত বলবেন ওদের দুনিয়াবী প্রভূ ওদের দুধ কলা, ঠান্ডা পানি আর রাতের আঁধারে নারী মদ দিয়ে ওদের ডাইরেক্ট মাতিয়ে রেখেছে পক্ষান্তরে আমাদের পিপার স্প্রে, বন্দুকের গুলি এবং গড়ম পনির কামন দিয়ে সাইজ করে।
হ্যা, এটা সত্য কিন্তু তাই বলে বসে থাকলে তো চলবেনা, তাইনা? আপনার প্রভূ যেহেতু মহা পরাক্রমশালী তাঁর প্রতিদান যেমন অফুরন্ত তেমনি তার শাস্তিও কঠিণ তাই তিঁনি দেখে নিতে চান কে পুরুষ্কারের উপযুক্ত আর কে শাস্তির হকদার। সেই মহা শক্তিধর প্রভুর সাহায্য ও পুরুষ্কার পাওয়ার জন্য পিপার স্প্রে, গড়ম পানির কামান আর বুলেটকে আরিঙ্গন করার জন্য যেমন ময়দানে ঝাপিয়ে পরতে হবে তেমনি এগুলোকে এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে একান্তে নিজের ঘরে শেষ রাতে সকলের দৃষ্টির এড়িয়ে আপন প্রভুর সান্বিধ্য লাভের জন্য কি করনীয় তা ঠিক করতে হবে? শেষ রাতে মুমিনের করণীয় কি তা যদি ভুলে না গিয়ে থাকি তাহলে আজ থেকে প্রতিটি মুমিনের গৃহ হোক এক একটা শাহাবাগ। শুরু হোক রাতের আঁধারে দাবী আদায়ের আরাধনা। মুমিনের অন্তর বিগলিত লাভার উদগীরন হোক মুদে আসা নির্ঘুম আঁখি দিয়ে। গন্ড বেয়ে অশ্রুধারা জমিনে পরুক গড়ম জলের কামান আর পিপার স্প্রের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে। দেখা যাক পিপার স্প্রে আর গড়ম জলের কামান বেশী কার্যকর নাকি মুমিনের বিগলিত অন্তর?
যে তরুণটি পুলিশের বুলেটের সামনে নিজের বুক পেতে দিল তার জন্য অবশ্যই প্রতিটি মুমিনের হৃদয় কাঁদে কিন্তু তার চিকিৎসা, তার ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দরদী মণ এবং মুক্ত হস্তে মুমিনের কিছু করণীয় আছে কিনা ভেবে দেখা দরকার।
বিষয়: রাজনীতি
১৯৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন