শাহবাগকে সংশোধনের দাওয়াত ও নতুন রাজনৈতিক দিশা

লিখেছেন লিখেছেন নুর হুসাইন ১১ জুন, ২০১৮, ১২:৪৭:৪৯ দুপুর

একরামুলকে ক্রসফায়ার করার সময় মোবাইল কলে ধারণকৃত এক হৃদয়বিদারক অডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর তা সর্বস্তরের বিবেকবান মানুষকে বিধ্বস্ত ও স্তম্ভিত করে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে অন্য অনেক প্রতিবাদকারীর মতো ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বেও শাহবাগে একটা কর্মসূচী হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিপেটা করে সেই কর্মসূচী পণ্ড করে দিয়েছে। যদিও মারধর ও লাঞ্ছিত করে ইমরান এইচ সরকারকে গ্রেপ্তার করা হলেও থানা থেকেই পরবর্তীতে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়।

আমরা এতদিন ধরে যেই শাহবাগকে চিনতাম ও জানতাম, সেই জায়গায় এবার ভিন্নরূপে শাহবাগকে দেখতে পেলাম। এইমুহূর্তে যখন কোনো দল বা গোষ্ঠী রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার মতো দুঃসাহস দেখাতে পারছে না, তখন এই দুঃসময়ে শাহবাগ সেটা পেরেছে এবং সেই দুঃসাহস দেখিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এ এক নতুন শাহবাগ দাঁড়াতে চাইছে, তাই কি?

তবে এতটুকুতেই খুব যে উৎসাহে গদগদ হয়ে পড়ছি এমন নয়। বরং আর সব গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক শক্তিগুলো যখন পঙ্গু অবস্থায় আছে, তখন অন্তত শাহবাগ থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সম্ভাবনাকে এগিয়ে নেওয়া যায় কিনা সেটাই আমার ভাবনা।

ফ্যাসিবাদী ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে এতদূর টিকে থাকতে শাহবাগের অতীতের বিতর্কিত ভূমিকার সংশোধন এবং সেই দায় মোচনের সময় এসেছে। এক্ষেত্রে শাহবাগ কতটা প্রস্তুত? একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর বিতর্কিত ভূমিকার সাথে শাহবাগের বিতর্কিত ভূমিকার তুলনা করা না গেলেও এটা তো সত্য যে, উভয়ই স্ব-স্ব বিতর্কিত ভূমিকায় ফ্যাসিবাদী প্রকল্পের অংশীদার।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে গিয়ে আইন-আদালত ও বিচারপ্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে উঠে শাহবাগ কেবল ফাঁসির এক দাবিতেই উন্মত্ত হয়েছিল। আধিপত্যবাদী শক্তির ম্যাকানিজমে পড়ে ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা সার্ভ করার মাধ্যমে শাহবাগ এদেশে এক ভয়াবহ বিভক্তির মেরুকরণ তৈরি করেছিল, যা ফ্যাসিবাদী দানবকে ক্রমাগত শক্তিশালীই করে তুলেছে। জনগণের মধ্যে বিভক্তি যত গভীর ও প্রসারিত হয়, ফ্যাসিবাদী শক্তির মসনদ ততই সুসংহত হয়।

তাছাড়া আজকে পরিস্থিতি এমনই যে, রাস্তায় নেমে ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ ও নিন্দা করবেন সেই সুযোগ নেই। এমনকি কোটার মতো বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় আন্দোলনকারীদের খোদ সংসদ থেকেই ‘রাজাকারের বাচ্চারা’ বলে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দলসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীকেও চরমভাবে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। রাজপথে নামার সুযোগ তাদের নাই।

এমতাবস্থায় শাহবাগে রাজপথে দাঁড়িয়ে ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে একটা ইতিবাচক কর্মসূচী হতে পারাটা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সম্ভাবনাকে কিঞ্চিৎ জাগিয়ে তোলে বৈকি। শাহবাগ যদি ফ্যাসিবাদী প্রকল্পে তার এতদিনকার অংশীদারিত্বের দায় মোচন করতে চায়, তাহলে এখনই তার সুবর্ণ সুযোগ। অতীতের বিতর্কিত ভূমিকার সংশোধনের এখনই তার মহা সুযোগ আছে। সেটা নেবে কি?

এখন থেকে ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রাজপথে রুখে দাঁড়ানোর এই ধারাবাহিকতা যদি শাহবাগ ধরে রাখতে পারে, তাহলে চলমান রাজনৈতিক সংকটে গণমানুষ যেমন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইমরানকে স্বাগত জানাবে, তেমনি শাহবাগের অতীতের দায় মোচনের সুযোগও এখানে নিহিত রয়েছে। এখন কথা হলো, এই সুদূরপ্রসারী সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শাহবাগ কতটা প্রস্তুত??

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে শাহবাগের এই প্রতিবাদ কর্মসূচীতে নৈতিক সমর্থন দিতে আদর্শ ও দল-মত নির্বিশেষে সবার প্রতি আমি আহ্বান জানিয়েছিলাম। এমনকি ইমরান এইচ সরকারের গ্রেপ্তারে আনন্দিত বা উল্লসিত না হতেও বলেছিলাম। কেননা এতে করে প্রকারান্তরে ফ্যাসিবাদের থাবাকেই শক্তিশালী করা হবে। এছাড়াও ইমরান সম্ভবত গত কয়েক বছরে ব্যক্তিগতভাবে ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের সমালোচক হিসেবে লক্ষণীয় ভূমিকা পালন করতে চাইছে। যদিও নিশ্চিত কিছু বলতে আরো সময় লাগবে। এর ফলে তার জনপ্রিয়তাও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। ইমরানের অতীত ভূমিকার কারণে আমরা তার বর্তমান ভূমিকাকে অবমূল্যায়ন বা তুচ্ছ করতে চাই না।

তবে, অবশ্যই ইমরান এইচ সরকার এবং শাহবাগের অতীতের বিতর্কিত ভূমিকার সমালোচনা হবে। কিন্তু যখন আর কোনো শক্তি রাজপথে দাঁড়াতেই পারছে না, ঠিক সেইমুহূর্তে শাহবাগের এই প্রতিবাদ কর্মসূচীর গুরুত্ব অপরিসীম। যারা আসলেই রাজনীতি বুঝেন, তারা এর গুরুত্বটা ঠিকই উপলব্ধি করতে পেরেছেন আশা করি।

কেন আমি শাহবাগের এই কর্মসূচীর প্রতি ইসলামপন্থীসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে নৈতিক সমর্থন দিতে বলেছিলাম?

বলেছিলাম এ কারণেই যে, প্রথমত আমাদের বোঝা উচিত, আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য ও আদর্শিক বৈচিত্র্য থাকা স্বাভাবিক। একইসাথে একটি ‘অখণ্ড ও একক রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী’ হিসেবে আমাদেরকে সুসঙ্ঘবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিভক্তি ও বিভাজন জারি রেখে তা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। একক রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের কমন জাতীয় স্বার্থগুলো রক্ষায় ধর্ম, আদর্শ ও দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি।

সম্প্রদায়গত স্বার্থও যেমন আছে, তেমনি দল ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে কমন জাতীয় স্বার্থও আমাদের রয়েছে। প্রত্যেকটি কম্যুনিটি তার তার স্বার্থ রক্ষার লড়াই করে। কিন্তু একইসাথে কমন জাতীয় স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়েও সব কম্যুনিটিকে সমানভাবে মার্চ করতে হবে। নাহলে একক রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমরা জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সুসঙ্ঘবদ্ধ হতে পারবো না।

মত ও আদর্শের বৈচিত্র্য একটি সমাজের জন্য অবশ্যই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু উন্মত্ত বিভেদ ও বিভাজনরেখা সমাজকে ভঙ্গুর করে তোলে। আর সমাজ ভঙ্গুর হলে রাষ্ট্রযন্ত্রও দুর্বল হয়ে পড়ে। আর এর সুযোগটা নেয় ফ্যাসিবাদী জালিম গণশত্রুরা। নিপীড়নের খড়গ নিয়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে জনগণের ঘাড়ে।

দ্বিতীয়ত, শাহবাগে এবারের এই ক্রসফায়ারের নামে বিচচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এই কর্মসূচীর রাজনৈতিক আবেদন বুঝাটা জরুরি। আপনি ইসলামপন্থী, লিবারেল, ন্যাশনালিস্ট, সেকুলার, আস্তিক, নাস্তিক যা-ই হন, এই কর্মসূচীর বিষয়বস্তু ও রাজনৈতিক আবেদন নিয়ে তো আপনার দ্বিমত থাকার কথা না, যদি আপনি অন্ধ, গোঁড়া ও পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে থাকেন।

আপনার আদর্শ ও ধর্ম যা-ই হোক, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ফলে যে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এটার বিরুদ্ধে যেকোনো আন্দোলন বা প্রতিবাদ সমাবেশের প্রতি আপনার নৈতিক সমর্থন এমনিতেই থাকার কথা, যদি আপনি বিবেকবান হন ও মানবাধিকারের পক্ষে থেকে থাকেন।

সুতরাং, এই সর্বজনীন যৌক্তিক কর্মসূচী থেকে ইমরান এইচ সরকারের গ্রেপ্তারে উল্লাস প্রকাশ করাটা আপনার ভুল। এটা বরং আপনার আদর্শ, বুদ্ধিবৃত্তি ও রাজনীতির মানও কমিয়ে দেবে নিঃসন্দেহে। শুধু তা-ই নয়, আপনার উল্লাস প্রকারান্তরে ফ্যাসিবাদী শক্তি কর্তৃক কণ্ঠরোধের ঘৃণ্য প্রচেষ্টাকেই সমর্থন ও বাহবা দিবে। এমন দায় আপনি নিবেন কেন, যা আপনার রাজনীতির জন্যই বরং ক্ষতিকর? তাছাড়া আপনার ওপরও যখন ফ্যাসিবাদের খড়গ নেমে আসবে, তখন আপনার প্রতিপক্ষও একইভাবে উল্লাস করবে। মাঝখান থেকে এই পারস্পরিক বিভক্তি ও ঘৃণাচর্চার সুযোগ নেবে সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিই! তাই একটু হুঁশে আসুন প্লিজ।

হেফাজত বা ইসলামপন্থীরা যদি বুদ্ধি করে শাহবাগের এই কর্মসূচীর প্রতি নৈতিক সমর্থন ব্যক্ত করে এবং কণ্ঠরোধের উদ্দেশ্যে ইমরান এইচ সরকারকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে ন্যূনতম একটা বিবৃতিও যদি দিতেন, তাহলে এটা এক অভাবনীয় বিষয় হতো বলেলে আমার ধারণা। সেকুলার ও প্রগতিশীলরাও হয়ত অনেক নেতিবাচক ধারণা থেকে বের হতে পারতো। শুধু তা-ই নয়, তখন ইসলামপন্থীদের রাজনীতি অন্য এক উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছতো। কেননা, মানবাধিকারের পক্ষে যার অবস্থান যতবেশি বলিষ্ঠ ও আপসহীন, তার পলিটিক্সও ততবেশি সর্বজনীন ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। হোক সেটা ইসলামী পলিটিক্স, বাম, জাতীয়তাবাদী কিংবা সেকুলার পলিটিক্স।

আপনার রাজনীতির একটা কেন্দ্রীয় মূল আদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু সেই আদর্শসমেত আপনার রাজনৈতিক আবেদনকে সর্বজনীন করে তুলতে হলে আপনাকে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের পক্ষে সর্বাগ্রে বুক ফুলিয়ে দাঁড়াতে হবে। কোথাও যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে মজলুমের নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষায় আপনাকে উচ্চকণ্ঠ হতে হবে। তার প্রতি আপনার সমর্থন সবার আগে পৌঁছাতে হবে, হোক না সেই মজলুম আপনার ধর্ম, আপনার চেতনা ও আদর্শের বিরোধী! তার প্রতি নৈতিক ও মানবিক সমর্থন মানে এই নয় যে, তার রাজনৈতিক আদর্শ ও নীতির প্রতি আপনার আত্মসমর্পণ।

তাহলেই আপনার রাজনীতি অন্য আর সবার রাজনীতির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। যেমন দেখুন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে একটা সর্বজনীন কর্মসূচীর কারণে শাহবাগের নতুন সম্ভাবনা জেগে উঠছে। এখন থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শাহবাগের লড়াই ও সংঘাত যত তীব্র হবে, শাহবাগের রাজনীতি ততই শক্তিশালী ও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে। কেননা, আপনার আদর্শ— ইসলাম, কমিউনিজম, সেকুলারিজম কিংবা ন্যাশনালিজম— যা-ই হোক না কেন, সর্বোপরি মানবাধিকার রক্ষার লড়াই-ই হচ্ছে আপনার রাজনীতির মূল শক্তি ও সম্ভাবনা, যা আর সব পক্ষ ও গোষ্ঠীকে আপনার রাজনীতির প্রতি আবেগকাতর করে রাখবে।

যাই হোক, আমরা সবাই একটা সুস্থ ও সম্প্রীতির সমাজ চাই। একইসাথে একটা সুসংহত রাষ্ট্র গড়তে চাই। তেমন আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র ও সমাজ মিলে আমরা নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষায় বলিষ্ঠ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবো। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করবো। প্রতিটি নাগরিকের ধর্মপালনের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। জুলুম, অনাচার ও বৈষম্যের বিলোপ ঘটাবো। রাষ্ট্র ও সমাজ সমান অংশগ্রহণে কাজ করবে। আচ্ছা, এসব ব্যাপারে আমাদের কারো দ্বিমত আছে কি? এই চাওয়াগুলো তো ধর্ম, আদর্শ ও দল-মত নির্বিশেষে আমার আপনার সবারই, তাই না? আর এই অভিন্ন চাওয়া ও স্বার্থগুলো পূরণের ক্ষেত্রে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসা ফ্যাসিবাদী গণশত্রুরাই প্রধান বাধা।

আর এদিকে আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের পথে অন্যতম বাধা হচ্ছে আমাদের প্রবল আদর্শগত বিরোধ, যা আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে দিচ্ছে না। আস্তিক-নাস্তিক দ্বন্দ্ব তো কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। এটা আদর্শিক ও ধর্মীয় বিষয়। এগুলোর গুরুত্ব যেমন, তেমনি থাকবে। এমনকি বাংলাদেশ রাষ্ট্র বিলুপ্ত হয়ে গেলেও পৃথিবীতে আস্তিক বনাম নাস্তিকের লড়াই চলতে থাকবে। কিন্তু আমাদের এই সাধের রাষ্ট্রই যদি টিকে না থাকে, তাহলে আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পরিণতি কী হবে বুঝতে পেরেছেন তো?

সুতরাং, আপাতত আদর্শগত বিরোধকে মুখ্য করে না তুলে আদর্শ ও দল-মত নির্বিশেষে আমাদেরকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খবিশ গণশত্রুদের হাত থেকে আমাদের এই সাধের রাষ্ট্রকে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন করতে হবে। অন্যথায়, একক ও অখণ্ড রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা ও ভবিষ্যত চূড়ান্ত বিপর্যয়ের মুখে পড়তে আর বেশি দেরি নাই। এখনই হুঁশিয়ার হোন সবাই।

তাছাড়া শাহবাগের নীতি ও আদর্শের সাথে ইসলামপন্থীদের আপস হওয়ার কথা না। সেটা ভিন্ন আলোচনা। সবাই বুঝেনও সেটা। শাহবাগ ও শাপলার আদর্শগত পার্থক্য আমি মানি। কিন্তু আমার এই লেখাটা মূলত রাজনৈতিক লেখা। আস্তিক-নাস্তিক দ্বন্দ্বমূলক লেখা নয়। তাই, রাজনৈতিক বোধ ও মনন দিয়েই লেখাটা পড়তে হবে। শাহবাগকে সংশোধনের দাওয়াত ও নতুন রাজনৈতিক দিশা দেওয়ার প্রচেষ্টা থেকেই এই লেখাটার জন্ম।

বিষয়: বিবিধ

৬০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File