শয়তানের ফাঁদ-৫

লিখেছেন লিখেছেন ভ্যাকটেস মাহামুদ ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৯:১১:০৩ রাত

"শয়তানের ফাঁদ"-৫

ভ্যাকটেস মাহমুদ

মাহমুদ সাহেব বাড়ি ফিরবে বলে মনস্থির করলেন।

দোকানে বিক্রি আজকে খুব একটা হয়নি, কিন্তু ২০০ টাকা মাল্টি-ফারপাসের ছেলে আদনান কে দিতে হলো। গত সপ্তাহে সে ১ লাখ টাকা লোন নিয়েছে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে। দোকানে একটা ফ্রিজ নেই। আরো অনেক জিনিস পত্র ধরকার।

কিন্তু টাকা নেই। ফ্রিজ থাকলে বিক্রি বাড়ে।

মা-বাবা সহ স্ত্রী মাহমুদা ও তার কন্যা মা মনি সুরাইয়া।

এই ত সেদিন সুরাইয়া যখন পৃথিবীতে আসলো মাহমুদার পিছনে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেল। হটাৎ করে এত গুলো টাকা খরচ হওয়ায় হিমশিম এর মধ্যে পড়ে গেল মাহমুদ। চক্ষু শিতল করার মত স্ত্রী জন্য এতো খুব সামান্য, যদিও বাস্তবতা তো উপেক্ষা করা যায় না। আর মেয়ে টা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর এক সুন্দর দান। সারাদিনের ক্লান্তি যেন কিছুই না। সুরাইয়ার হাত পা এদিক ওদিক ছোড়াছুড়ি রুক্ষ মনে ফিরিয়ে দেয় সতেজ কলকলা বাতাসের সুর।

দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরলেন। বাসায় এসে দেখে সুরাইয়া ঘুমিয়ে আছে। আর মাহমুদা বসে বসে কোরআন তেলাওয়াত করছে। ঘুমন্ত সুরাইয়াকে একটা চুমো দিয়ে, মাহমুদার পাশে এসে বসলো।

মাহমুদা- যাও গোসল করে আসো

ওকে বলে মাহমুদ বাথরুমে চলে গেল বাধ্য স্বামীর মত।

গোসল শেষে খাবার খেতে খেতে মাহমুদা বলতে লাগল এটা লাগবে ওটা লাগবে। মাহমুদ জানে মাহমুদা উল্টাপাল্টা কিছু বলেনা। দরকারি জিনিস ই বলল। এর মাঝে ছোট্ট মা সুরাইয়ার অনেক গুলো জিনিস। মন দিয়ে শুনলো, মাহমুদার বলা শেষ হলে, মাহমুদ বলল- সময় করে এনে দেব। আমি আবার ভুলো মন, লিখে দিও।

মাহমুদা হ্যাঁ সুচক মাথা নেড়ে খাবার শেষ করেই জিজ্ঞেস করল, কেমন যেন চিন্তিত লাগছে। না বলে মাহমুদ এডিয়ে গেল। কিন্তু মাহমুদা জানে তার স্বামী অন্যরকম মানুষ।

মাহমুদার কপালে চুমো দিয়ে মাহমুদ বললো, চলো ঘুমাবো, আল্লাহর ভরসা। বিচানায় শুয়ে শুয়ে মাহমুদ চিন্তার রাজ্যে হারিয়ে গেল। এই ত সেদিন হটাৎ কল আসলো মাহমুদা অসুস্থ।

মায়ের কল পেয়ে ডাক্তার নিয়ে বাড়ি গেল। মাহমুদের বন্ধুরা তাকে বউ পাগলা বলে। সত্যই অনেক বেশি ভালোবাসে মাহমুদাকে। আবার লাজুক ও, কারো সামনে বউ এর হাত ও ধরতে লজ্জা পায়। ৭ মাস হয়ে গেল লজ্জার কারনে কোথাও নিয়ে যায়না। মাহমুদা এগুলো খুব উপভোগ করে। আজও এসে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। কারন তার মা এবং ডাক্তার রুমে। ডাক্তারের চেকিং শেষ হলে সবাই বেরিয়ে গেল, আর মাহমুদ কে পরে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে বলল। মাহমুদা অবিমানের সুরে বলে উঠলো তুমি একটুও আমায় ভালোবাসো না। আমি অসুস্থ ডাক্তার নিয়ে এসে দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কই আমার পাশে বসে হাত ধরে রাখবে, তা না। পাশে বসে কপালে চুমো দিতেই মাহমুদা বলব এখন আর দরদ দেখাতে হবেনা। মাহমুদ বুঝলো এ ভালোবাসার অভিমান। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল। ডাক্তার দেখা করতে বলেছে, আর ওই যে বললা ভালোবাসি না, এটা কিন্তু সত্য না। আচ্ছা আসার সময় চকলেট নিয়ে আসব নি পিচ্ছি। আমি পিচ্ছি না -মাহমুদার মুখে হাসি।

রুম থেকে বের হয়েই চিন্তায় পড়ে গেল মাহমুদ, কি হয়েছে যে ডাক্তার এখানে না বলে দেখা করতে বলল।

পরের দিন ডাক্তার জানালো তার বউ এর প্রতি এক্সট্রা যন্ত নেয়ার জন্য। মাহমুদ বুঝতে বাকি থাকলো না।

প্রতিদিন সকালে মাহমুদা ঘুম থেকে উঠে মাহমুদ কে জাগায়, মাহমুদ আবার প্রচুর ঘুম কাতুরে। মাঝেমাঝে পানি ছিটাও দিতে হয় মাহমুদকে জাগানোর জন্য। মাঝেমাঝে একসাথে ২ জন নামাজ পড়ে, অধিকাংশ সময় জামাতে নামাজ আদায় করে ফিরে এসে মাহমুদা কে নিয়ে বাউন্ডারি ওয়ালের ভিতর বাগানে ঘুরে বেড়ায়।

চলতে চলতে মাহমুদার সন্তান প্রসবের সময় এসে যায়। ক্লিনিকে ভর্তি করায়। রক্তক্ষরণ এর ফলে মাহমুদার অবস্থা অবনতি ঘটায় কিছুদিন হাসপাতালে রাখতে হয়েছিল। ছোট্ট একটা কন্যা সন্তান এ জগতের আলো দেখে। ফুটফুটে, মিটিমিটি চোখে তাকায়। কিন্তু জন্মের পর ই ভিবিন্ন অসুখ ভিবিন্ন সমস্যা চলতেই থাকলো। নাম রাখলো সুরাইয়া বিনতে মাহমুদ। সুরাইয়া আসার পর থেকে দোকানে বিক্রি বাড়লো, কিন্তু সুরাইয়ার অসুস্থতাজনিত কারনে সব টাকা ডাক্তারের কাছেই যাচ্ছে। ডাক্তার তো নই যেন কশাই, চিবিয়ে চিবিয়ে টাকা নেয়। ভালোবাসা এবং টাকা যখন টক্কর লাগে, তখন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী এবং কন্যাকে অন্তান্ত ভালোবাসে মাহমুদ কিন্তু ছোট দোকান দিয়ে হচ্ছিলোনা। আস্তে আস্তে দোকান এর মূলধন টান পড়ছিল।

.

.

আদনান, গ্রামের নাম করা মাল্টিপারপাসের ম্যানেজার। মাল্টিপারপাসের মালিক গ্রামের চেয়ারম্যান। নাম : আরজ আলি। আদনান এসে চেয়ারম্যান কে খবর দিল, স্যার মাহমুদ কে ত চিনেন?

-হ্যা! কি হয়েছে?

- কিছুদিন হলো বাবা হয়েছে। তখন অনেক গুলো টাকা খরচ হয়েছে। ওর মেয়ে অসুস্থতার কারনে আরো অনেক টাকা খরচ হয়েছে। যার ফলে ওর দোকানে জিনিস পত্র কমে গেছে। নতুন করে জিনিস উঠানোর মত টাকা নেই আমি যতটুকু জানি। আর কৃত্রিম পণ্যের সংকট তৈরি করায় অনেক লাভ হয়েছে অনেক দোকানদার লোণ নিয়েছে, যারা সুদ বলে লোণ নিতোনা তারাও নিয়েছে। কিন্তু মাহমুদ এখনো নেয় নি। ওর পিছনে একটু সময় দিলে কাজ হবে।

সাবাস ভালো নিউজ দিয়েছিস, যা তোর বেতন বাড়িয়ে দেব নি বলল আরজ আলি।

ভাই কেমন আছেন? দোকান কেমন চলছে? দোকানে ঢুকেই মাহমুদ কে জিজ্ঞেস করল অঞ্জন সরকার।

-আলহামদুলিল্লাহ!

-কেমন যেন শুকনো মুখ, দোকানে জিনিসপত্র ও ত নাই। কেমন ফাঁকা ফাঁকা।

চুপচাপ শুনছে মাহমুদ কি বলবে হয়ত বুঝে উঠতে পারছেনা।

বর্তমান হচ্ছে প্রতিযোগিতার মাঠ বুঝলেন মাহমুদ ভাই। মাঠ আপনাকে দখলে রাখতে হবে। কাস্টমার ধরে রাখতে হবে। একটু ডেকোরেশন করুন, একটা ফ্রিজ কিনুন। দেখবেন কাস্টমার বাড়বে, বিক্রি বাড়বে। আর জিনিস না থাকলে বিক্রি কি করবেন। কত কষ্ট লাগছে মাহমুদ ভাই জানেন আমার। কয়দিন আগেও আপনার দোকার ভর্তি জিনিসপত্র ছিল। এখন কেমন ফাঁকা ফাঁকা!

-ভাই আসলে এসব চিন্তা ত আমার ও আছে। কিন্তু....

- কিসের কিন্তু আবার! আপনার কত ফুটফুটে একটা রাজকন্যা! পুরো ভাবির কপি। আমি ওই দিন কোলে নিয়েছিলাম, অনেক আদর করেছিলাম। আরে ওর জন্য ত চিন্তা করতে হবে। এভাবে চললে তো দোকান লাটে উঠবে।

অঞ্জন কথার মাঝে সুরাইয়ার কথা বলায়, হটাৎ মেয়ের সুন্দর চেহারাটা ভেসে উঠল মাহমুদের মনে। এখনো কিছুই বলতে পারেনা সুরাইয়া। হাত-পা ছোড়াছুড়ি করে। মুখের কাছে মুখ নিলেই খেয়ে পেলবে অবস্থা। নিজেই হেসে উঠল।

অঞ্জন বলে উঠল। কিরে ভাই হাসেনা ক্যা?

-আরে না, এই মেয়ের কথা মনে পড়ল তো।

- আমিও মাহমুদ ভাই তায় বলছিলাম। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে। আরে মাহমুদ ভাই কিসের চিন্তা করেন। টাকা ধরকার তো জানি আমি। ভাবির আর মেয়ের পিছে অনেক টাকা গেছে। আরে মাহমুদ ভাই আমি তো আপনার ভাই লাগি নাকি? টাকা লাগবে আমরা আছি না। আমরা কি মরে গেছি।

কি বলবে মাহমুদ বুঝে উঠতে পারছেনা। চুপ করে বসে আছে। চিন্তিত মনে হচ্ছে। কিন্তু কি ভাবছে বুঝা যাচ্ছেনা।

অঞ্জন আজকের মত উঠি বলে চলে গেল। নামাজের সময় হয়েছে তালা দিয়ে নামাজে গেল মাহমুদ।

পরের দিন সকাল সকাল অঞ্জন হাজির বাড়িতে। আজ আর কিছু বলেনি, একসাথে বাজার পর্যন্ত আসলো কথা বলতে বলতে।

এই অসময়ে কেউ তাকে কিছুটা সাপোর্ট দিচ্ছে মনে করে, মাহমুদের কাছেও ভালোই লাগছে।

রাতে মাহমুদার কাছে অঞ্জন যে টাকা দেয়ার কথা বলেছিল, তা বলল মাহমুদ।

মাহমুদা শুনেই বলল, এরা ভালো লোক নই। এদের থেকে ধুরে থাকবেন। এদের ভুকপিট নাই।

কে আছে? কে আমাকে এই অসময়ে একটু হেল্প করবে। হোক না অঞ্জন খারাপ, সে তো আমাকে সাহায্য করতে চেয়েছে। ভালো নামধারী রা কই? কেউ কি আছে। এক প্রকার ধমক আর রাগমাখা সুরেই মাহমুদ কথা গুলো বলল।

মাহমুদা এর আগে কোনদিন মাহমুদের এমন ব্যবহার দেখেনি। মাহমুদা আর কিছু বলল না। বিচানায় এক পাশ হয়ে ফুলেফুলে সারারাত কেঁদেছে।

পরের দিন সকাল বেলা অঞ্জন এসে হাজির! এসে কথা জুড়ে দিল। এই সেই বলে এক সময় বলে উঠলো, আপনাকে টাকা দেয়ার কথা বলেছিলাম না, আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য।

মাহমুদ ও যেন উন্মুখ হয়েছিল এটাই শুনার জন্য।

চলেন যাব! অঞ্জন মাহমুদ কে বলল।

-কোথায় যাব?

-গেলেই বুঝবেন

বাজারের অপর পাশে আরজ আলি চেয়ারম্যানের বড় সাইনবোর্ড লাগানো মাল্টিপারপাস। মাহমুদ এবং অঞ্জন ঢুকলো সেখানে। আদনান বসে আছে চেয়ারে। সুন্দর পরিপাটি ছেলেটা। দেখতেই ভালো লাগে। মাল্টিপাসপাস সম্পর্কে মাহমুদ কিছুটা জানে। সুদের বড় আস্তানা। যা কুড়েকুড়ে খাচ্ছে সমাজ টাকে। কিন্তু এসব না যতটুকু মাথায় কাজ করছে তার ছেয়ে বেশি কাজ করছে আদনান এর সুন্দর কথা এবং দরকার টাকা। অবশেষে ১ লাখ টাকার লোন নিয়ে নিল। প্রতি দিন ২০০ করে। এ আর বেশি কি প্রতিদিন ২০০ করে মাত্র।

মাল্টিপারপাসের কাজ শেষ করে দোকানে এসে ধারুন খুশি। চিন্তা করেই ফুলকিত হয় মাহমুদের মন। তবে মাহমুদাকে এ নিয়ে কিছু বলা যাবেনা।গতকাল একবার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে। নিজের কাছেও খুব খারাপ লেগেছিল। বাসায় যাওয়ার সময় নেবিব্লু কালারের কামিজ সেট মাহমুদার জন্য, আর মেয়ের জন্য একটা ছোট্ট একটা জামা, আর টুকিটাক ধরকারি জিনিস গুলো নিলো।

বাসায় গিয়ে মাহমুদা কে জামাটা দিল মাহমুদ, কিন্তু মাহমুদা ধরেও দেখতে রাজি না। ধারুন অভিমানী!

কয়েকদিন পর চকলেট কিনেছে মাহমুদার জন্য। আর গত সপ্তাহে অনেক গুলো জিনিসের কথা মাহমুদা বলেছিল, তা কিনে নিল। মাহমুদা এখনো বাচ্ছাদের মত চকলেট পছন্দ করে। যদিও তার একটা বাচ্চা আছে। কিনে বাড়িতে আসলো, এসে দেখে মাহমুদা কাপড় গুছিয়ে রেখেছে কোথায় যেন যাচ্ছে। কিন্তু এমন ত হবার কথা নই। মাহমুদ কে না বলে সে কছুই তো করে না। চিন্তার রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠলো মাহমুদের কপালে। গিয়ে পাশে বসতেই মাহমুদা বলে উঠলো, আমি মায়ের কাছে যাব।

- কেন শান্ত সুরে; মাহমুদ জিজ্ঞেস করল।

উত্তর আসেনা, সবার জিজ্ঞেস করল।

বলেনা বলেনা, ধারুন অভিমানী মাহমুদা। কিছুক্ষণ পর বলল। আমি আপনাকে নিষেধ করেছিলাম অঞ্জনের সাথে না মিশার জন্য। কিন্তু আপনি শুনেন নি। আপনি যে সুদে লোন নিলেন ১ লাখ টাকা তাও আমাকে কিছুই জানাননি।

মাহমুদ ত থ বনে গেল। কিভাবে জানলো!

আবার বলতে শুরু করল মাহমুদা; আমি কি কারো কিছু লাগি! যে সুদ নিয়েছে তার বাড়িতে আমি থাকবোনা। আমি, আমার মেয়ে আজকেই ওর নানা বাড়ি যাব। আপনি দিয়ে আসবেন।

সুদ দেয়া নেয়া হারাম জেনেও আপনি... কথা শেষ করার আগেই কেঁদে দিয়েছে মাহমুদা।

মাহমুদ অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।

কিছুক্ষণ ফুঁপিয়ে কেঁদে চোখ মুছতে মুছতে ভাঙা গলায় মাহমুদা বলল। আমি সেই মাহমুদ কে বিয়ে করেছি, যে জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা আমাকে সহজ করে দিবে। কিন্তু আপনি সুদ নিয়েছেন!

আমি সুদের কোন কিছুই নিজের ভিতর নিতে চাই না। আপনি যেদিন সুদ মুক্ত হবেন সেদিন আমাকে আনার জন্য ওই বাড়ি যাবেন। প্রয়োজনে এক বেলা খাবো কিন্তু সুদ নিয়ে জাহান্নামি হতে রাজি নই। আমি অপেক্ষায় থাকব, কারন আমি আপনাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি.....

কথা পুরো শেষ করার আগেই মাহমুদা কেঁদে ফেলে, কাঁদছে তো কাঁদছে থামা থামি নাই।

এদিক মাহমুদ অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে মাহমুদার দিকে। মনে হয় জগতের সব ছেয়ে বড় অপরাধী সে।

মাহমুদা মায়ের বাড়ি যাবে বলল, কিন্তু তাকে বাঁধা দেয়ার মত বা না বলার মত সাহস এখন মাহমুদের নেই।

কিছুক্ষণ পর সিএনজি আসলো। মেয়েকে মাহমুদা নিজের ভুকে ধরে রেখেছে। মাহমুদ কে ধরতেও দেয় নি। সারা রাস্তা কেউ কথা বলেনি।

সুরাইয়ার নানা বাড়ির সামনে এসে সিএনজি থামলো। মাহমুদের হাতে একটা চিঠি ধরিয়ে দিয়ে, দৌড়ে যাওয়ার মত করে বাড়ির দিকে চলে গেল মাহমুদা।

.

মাহমুদ স্ত্রী এবং প্রাণপ্রিয় মেয়ের যাওয়ার দিয়ে কিছুক্ষণ ছেয়েছিল। চিঠিটা উল্টিয়ে পাল্টিয়ে পড়তে শুরু করল মাহমুদ

" প্রিয়তমা, আমার কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে তোমার থেকে চলে আসতে। কিন্তু তুমি তো জানো আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি, আল্লাহ ও রাসুল কে সব কিছুর ছেয়ে বেশি ভালোবাসতে না পারবে সে মুমিন নই"

তুমি অতি তাড়াতাড়ি সুদ থেকে বের হয়ে আমাকে নিয়ে যাবে। এবং সুদ মুক্ত সমাজ গড়ার চেষ্টা করবে। বাজারে এমন কোন দোকান নেই যারা সুদ নিচ্ছেনা। কিন্তু কেন? তোমাকে এর প্রতিবাদে সচেষ্ট হতে হবে। এবং সমাজ থেকে সুদ দূর করতে হবে।

I love you.....

তাড়াতাড়ি আসবে কিন্তুক। আর আসার সময় চকলেট নিয়ে আসবে..... তোমার আমানত তোমার মেয়েকে আগলে রাখতে চেষ্টা করব আমি।

ইতি, মাহমুদা

চিঠি পড়তে পড়তে মাহমুদের চোখের পানি বেরিয়ে গিয়েছিল নিজের অজান্তে। মনে মনে বলতে শুরু করল মাহমুদ, কি জন্য কি করেছি! লোভ আমাকে সুদের মত আগুনের কাছে নিয়ে গেল....

বিষয়: Contest_priyo

৫৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File