"মতভেদ"
লিখেছেন লিখেছেন খয়ের খা ১৭ মার্চ, ২০১৬, ০৩:৫৭:৪৪ দুপুর
আমাদের স্বভাব এত খারাপ কেন ? আমরা বাংলাদেশীরা অথবা বাঙ্গালীরা অতপর বাংলাদেশী মুসলিমরা সবসময় দুই বা ততোধিক দলে বিভক্ত থাকি সবসময়. রাজনীতি বলুন অর্থনীতি বলুন কিংবা সমাজনীতি ... সর্বাধিক মুসলিম অধ্যূষিত হয়েও নিজেদের মধ্যে আমাদের বিরোধ একেবারে তুঙ্গে... রাজনীতি অর্থনীতি কিংবা সমাজনীতি সম্পর্কে আমার জ্ঞান শুন্যের কোঠায়... তবে ইসলাম সম্পর্কে ক্ষুদ্র জ্ঞানের আলোকে যতটুকু জানা আছে তা ক্ষোভ অথবা দুঃখের বহিপ্রকাশ হিসাবে লিখতেই হলো জন্মের পর হতেই দেখে আসছি আমাদের মুসলিম সমাজ দুই ভাগে বিভক্ত যার একটি সুন্নী অপরটি ওয়াহাবী নামে পরিচিত ওয়াহাবীবাদীদের বিরুদ্ধে সুন্নীদের অভিযোগ ওয়াহাবীবাদীরা নবী মানেনা নবীর সুন্নতের তোয়াক্কা করে না, একই ভাবে সুন্নীদের বিরুদ্ধে ওয়াহাবীবাদীদের অভিযোগ সুন্নীরা সুন্নাহর নামে শিরক করছে... ওয়াহাবীদের যুক্তি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মাটির তৈরী এবং তাদের মতই সাধারন মানুষ ওনার উপর শুধু ওহী নাজিল হতো. পক্ষান্তরে সুন্নীদের যুক্তি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) নূর অথবা আলোর তৈরী. আমাদের বয়স কিছুটা বাড়ার পর দেখলাম সুন্নীদের মধ্যেও দুটি ধারা
বিরাজমান যার একটি কড়া সুন্নী অপরটি নরমপন্থী তবে উভয়ের আদর্শ একই শুধুমাত্র নরমপন্থীরা ওয়াহাবীদের কিছু বিষয়ে একমত পোষন করে.. ওয়াহাবীদের বিরুদ্ধে সুন্নীদের বড় অভিযোগ তারা দরুদ পড়েন না মুনাজাত করেননা.. এর জবাবে ওয়াহাবীদের যুক্তি তারা নামাজের মধ্যেই দরুদ ও মুনাজাত সম্পন্ন করেছেন তাই আলাদা পড়ার দরকার নাই. আর সুন্নীদের বিরুদ্ধে ওয়াহাবীদের বড় অভিযোগ সুন্নীরা কথায় কথায় মিলাদ শরীফের নামে দরুদ শরীফের নামে মুনাজাতের নামে শিরক করছে অপরের ইবাদতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে... লক্ষ্য করুন এখানে কারো যুক্তিই অগ্রাহ্য করার অবকাশ নেই কিংবা উভয় অভিযোগই যুক্তি সঙ্গত যেমন আমরা জানি নামাজের মধ্যেই দরুদ শরীফ পাঠ করা হয় আপনারাই সবসময় বলেন আল্লাহর কাছে বান্দা যত বেশি চায় আল্লাহ তত বেশী খুশী হন সেই সুবাদে আলাদা দরুদ শরীফ ও মুনাজাত পাঠ করতে অসুবিধা কোথায় ? রইল বাকী দাড়িয়ে দরুদ শরীফ পড়ার কথা আমরা যারা স্কুল মাদ্রাসা কলেজে পড়েছি সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেছি অথবা করছি তারা সবাই যদি শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক প্রবেশ অথবা অফিসে উচ্চপদস্থের প্রবেশের সময় দাড়িয়ে সম্মান দেখাতে পারি তাহলে আল্লাহর রাসুলের সম্মানে দাড়িয়ে দরুদ শরীফ পাঠ করলে সম্মিলিত মোনাজাতে শরীক হলে নবীর প্রতি ভালবাসা ও ভাতৃত্ব বন্ধন অটুট হবে... একই ভাবে সুন্নীরা মসজিদে নামাজরত মুসল্লীর আধিক্যের দিকে খেয়াল রেখে মিলাদ শরীফ দরুদ শরীফ ও মুনাজাত পাঠ করার সময় নামাজরত মুসল্লীর অসুবিধার কথা মাথায় রাখা উচিৎ. অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন মসজিদে অথবা মহল্লায় গুটিকয়েক মানুষের উপস্থিতিতে উচ্চস্বরে মাইক ব্যবহার করে গাউসিয়া মাহফিল মিলাদ মাহফিল করা হয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় স্বল্প সংখ্যক শ্রোতারা মাইক বিহীন মাহফিলে আরো বেশী মনযোগী হতে পারছেন পক্ষান্তরে মাইক ব্যবহারের ফলে মাহফিলের বাইরে যারা অবস্থান করেন কিন্তু মনযোগী হতে পারেননা তারা এবং মাহফিলের উদ্যাক্তা মনের অজান্তে গুনার ভাগী হয়ে যান কারন মাহফিল চলাকালে বেশ কিছু জবাব দেয়া ওয়াজিব হয়ে পড়ে কিন্তু দুনিয়াবী কর্মকান্ড ও নানান ব্যস্ততার ফলে সবার পক্ষে শ্রবন ও জবাব দেয়া সম্ভব হয়না এবিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ রইল. মাজার অথবা দরগাহ নিয়ে সুন্নীদের বিরুদ্ধে ওয়াহাবীদের অভিযোগ বিস্তর. নিঃসন্দেহে মাজারে সেজদা করা মাজারে শায়িত যিনি তার কাছে চাওয়া শিরক ও বেদআত . তবে আল্লাহর অলিদের দরগাহে জেয়ারতে
কোন গুনাহ থাকার কথা নয়. অবশ্য যারা প্রতিনিয়ত শিরক করে চলেছে আখেরাতে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর পরিনতি আমরা প্রায় সময় লক্ষ্য করি বেশ কিছু উচ্চ শিক্ষিত ধর্মভীরু ব্যাক্তি জেনে না জেনে ইসলাম সম্পর্কিত বাক্য ও শব্দের বিকৃত উচ্চারন করেন যেমন জুমাকে "ঝুমা" গাউসিয়াকে "ঘাউসিয়া" বলে উচ্চারণ করেন যা শ্রবনে পীড়াদায়ক.. আল্লাহর দরবারে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি এইজন্য পাকিস্তান ,ইরাক, ও ইরানের মত আমাদের দেশে শিয়া সুন্নীর কোন কলহ নাই... আসুন আল্লাহর নির্দেশ ও ও রাসুলে করীম সাঃ এর আদর্শেই সঠিক বুনিয়াদী ও প্রচলিত ইসলামের পথেই পথ চলি কোন সংযোজন অথবা বিয়োজন পরিহার করি. মহান আল্লাহ সবাইকে সুস্থ অবস্থায় সত্য পথে চলার তৌফিক দান করুন আমিন... বিদা জায়েদ. আবুধাবী. সংযুক্ত আরব আমিরাত...
বিষয়: বিবিধ
৯৬৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অফিসের বস ক্লাস শিক্ষক সামনে উপস্থিত, তাই দাঁড়ায়। রাসুল কি সামনে থাকে? দাঁরিয়ে সালাম দিতে হবে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন