"মসজিদুল হারাম" নাকি হেরেম, হেরম, অথবা হারম ?

লিখেছেন লিখেছেন ওমর ফারুক ওমানী ১২ আগস্ট, ২০১৮, ০৮:২৯:০১ রাত





আসসালামু আলাইকুম

একটি প্রশ্ন ও বিনীত জিজ্ঞাসা ছিল বাংলাদেশী ভাই-বোনেরা "মসজিদুল হারাম"কে হেরম, হেরেম, হারম, হেরাম নামে সম্বোধন করেন কেন ?

প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মুসলিম হজ্ব করার উদ্দেশ্যে সৌদী আরব গমন করেন ..

বাংলাদেশ হতেও প্রতি বছর দেড় লক্ষাধিক হজ্বযাত্রী বা হাজী হজ্ব করেন . প্রায় একই সংখ্যক বাংলাদেশী হজ্বের মৌসুম ছাড়া ওমরা করতে সৌদী আরব যান . এছাড়াও কর্মসূত্রে সৌদী আরব অবস্থান করছেন প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশী ...

পবিত্র আল কোরআনে এবং বিভিন্ন হাদীসে পবিত্র "মসজিদুল হারাম"কে "আল মসজিদ আল হারাম" বলে উল্লেখ করা হয়েছে . এবং সরল বাংলা লেখালেখীতেও "মসজিদুল হারাম" বলে উল্লেখ করা হয় . যার অনেক অর্থ বিদ্যমান যেমন : পবিত্র এলাকা, পবিত্র মসজিদ, নিষিদ্ধ এলাকা ইত্যাদি ..

আমি প্রায়শঃ লক্ষ্য করি, স্থানীয় আরবী ভাষী তো বটেই উপমহাদেশের পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার বাসিন্দারাও "আল হারাম" বলতে অভ্যস্ত .

শুধুমাত্র বাংলাদেশী হাজী ও ওখানে কর্মসূত্রে অবস্থানরত ভাই-বোনেরা "মসজিদুল হারাম"কে হেরম, হেরেম, হারম, হেরাম নামে সম্বোধন করছেন ..উনাদের ধারনা এত মর্যাদাপূর্ন মসজিদকে "হারাম" বলি কিভাবে অথবা যদি "হারাম" শব্দটি উচ্চারণ করি তাহলে গোনাহ্ হবে . আমি ওখানে বহুদিন ধরে আছেন এরকম কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে সঠিক জবাব পাইনি . এমনকি আমাদের অনেক বিশিষ্ট জন ও মোয়াল্লেম মহোদয়কে এ ব্যাপারে কোরআন হাদীসের আলোকে ব্যাখা দিতে বললে উনারা ও দুই ধরনের জবাব দিলেন যা শুনে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি ..

আরবী ভাষা একটি সমৃদ্ধশালী ভাষা, যার এক একটি শব্দের অনেক প্রতিশব্দ আছে তেমনি আমাদের প্রিয় বাংলাভাষাও সমৃদ্ধশালী, লক্ষ্য করলে দেখবেন বাংলা বর্ণমালায় এমন কিছু বর্ণ আছে যা পৃথিবীর কোন ভাষা অথবা বর্ণমালায়নেই , এরপরও আমরা "আল হারামকে" হারম, হেরেম, হেরম হারেম অথবা হেরাম বলে অমর্যাদা কেন করবো ...

আরবীতে হুরম শব্দের অর্থ রমণী বা রমণীগণ , আর রমণীগণ যেখানে অবস্থান করেন সেই স্থানের নাম হেরেম অথবা হেরম . সোজা বাংলা অর্থে অন্দরমহল , আগেকার দিনে বাদশাহ্ -শাহেনশাহদের বিলাসী কক্ষকে হেরেম বা হেরম বলা হতো . এখনো আরবী ধনীদের অন্দরমহলকে হেরেম বা হেরম বলে অভিহিত করা হয় . আরবী ভাষায় হারেম , হারম অথবা হেরাম শব্দের কোন অর্থ নেই ..

তাই সকল মুসলমান ভাই-বোনদের প্রতি বিনীত অনুরোধ অন্য কোন শব্দ উচ্চারণ নাকরে বলুন "মসজিদুল হারাম" আর যদি তা বলতে সংকোচ লাগে তারা "বায়তুল্লাহ শরীফ" বা মক্কা শরীফ বলে সম্বোধন করতে পারেন ..

শ্রদ্ধেয় বিজ্ঞ আলেম গনের কাছে আমার অনুরোধ এই বিষয়টি যেন আরো সহজে সবাই বুঝতে পারে একটি নিবন্ধের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন ..

(বিঃ দ্রঃ দয়া করে অহেতুক তর্ক ও বাজে কমেন্ট হতে বিরত থাকার অনুরোধ রইল)

মহান আল্লাহ সবার সহায় হোন আমিন ...

https://www.bishorgo.com/user/9264/post/2759

https://m.youtube.com/watch?v=vTZ0RVu7xE0&feature=youtu.be

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385760
১২ আগস্ট ২০১৮ রাত ০৮:৫৯
ওমর ফারুক ওমানী লিখেছেন : ভালো লাগলো
385765
১৪ আগস্ট ২০১৮ সকাল ০৬:২৮
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বিষয়টি গোচরে আনার জন্য।
385775
১৪ আগস্ট ২০১৮ রাত ০৯:০৩
হতভাগা লিখেছেন : খুব কমন একটা ভুল সংশোধনের প্রয়াস চালিয়েছেন। আমারও এটা মনে হত 'হারাম' মানে তো নিষিদ্ধ । তাহলে এত পবিত্র একটা মাসজিদকে কেন হারাম বলে।

তাহলে আরবী শব্দ 'হারাম' এর আরেক অর্থ বাংলায় হবে পবিত্র।

এরকমই একটা ঝামেলায় পড়েছিলাম হজের সময়। তাওয়াফে যাবার সময় মুরুব্বীর জন্য হুইল চেয়ার খুঁজছিলাম। তখন কাবা শরীফের সাথে কাঠের রিং ছিল (যেটা এখন আর নেই)। সেই পথে উঠার সময় নিচে অনেকগুলো হুইল চেয়ার পড়ে ছিল (আগের হাজিদের ফেলে যাওয়া বা দান করে যাওয়া)। সেখানে যখন বললাম হুইল চেয়ার লাগবে (ইংরেজীতে) , তখন ইংরেজী না বুঝা সৌদি জিজ্ঞেস করলো- আরাবিয়া ? আমি বুঝলাম হয়ত বলতে চেয়েছে আমি আরবের লোক কি না । তখন বললাম - নন-আরাবিয়া। ফিরিয়ে দিল, হুইল চেয়ার নিতে দিল না । মন খাবার হল, রুমে ফিরে সঙ্গীদের বললাম - সৌদিরা দেখেন কেমন- হুইল চেয়ার চাইলাম , জিজ্ঞেস করলো আরাবিয়ান কি না ? না বলাতে আর দিলই না! তখন তারাও বললো - দেখেন সৌদিরা কেমন , একজন মুসলমান ভাইকে সাহায্য করলো না !! ২/১ দিন পর সৌদি প্রবাসী একজন আসলো আমাদের একজনের মেহমান হয়ে । তখন তাকে ঘটনা বললে সে হেসে উঠলো। বললো - আরাবিয়া মানে হুইল চেয়ার। আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিল আরাবিয়া মানে হুইল চেয়ার লাগবে কি না ? আর আপনি নন আরাবিয়া বলাতে সৌদিটি বুঝেছিল যে আপনার হুইল চেয়ার লাগবে না । ভীষন লজ্জাতেই পড়ে গিয়েছিলাম তখন।
385779
১৫ আগস্ট ২০১৮ রাত ১০:৪১
ওমর ফারুক ওমানী লিখেছেন : "হারাম" শব্দের অনেকগুলো অর্থ বিদ্যমান ..
তবে "আল মসজিদ আল হারাম" এর ক্ষেত্রে এর সাবলীল উত্তর হচ্ছে যে দুনিয়াবী সকল হালাল অথবা বৈধ যঅনেক কর্ম আছে তা এখানে করা নিষিদ্ধ ..
যেমন একজন ব্যক্তি যদি তার পিতা অথবা ভাইয়ের হত্যাকারীকে এখানে পায় তাহলে তাকে ঐ সময় হত্যা কিংবা আটক করতে নিষেধ করা হয়েছে ..
দেশের জন্য, দ্বীনের জন্য যুদ্ধ করা বৈধ হলেও এখানে নিষিদ্ধ ...
এরকম অনেক বৈধ কাজ এখানে নিষেধ বলেই এই উচ্চাসীন ও মর্যাদাসম্পন্ন মসজিদের নাম "আল মসজিদ আল হারাম" পবিত্র মদিনার "আল মসজিদ আল নববীকেও" আল হারাম বলা হয় ...
আরবীতে এই দুই মসজিদের সমষ্টি নাম "আল হারামাইন শরীফাইন" অর্থাৎ দুই পবিত্র মসজিদ .
সকল মন্তব্যকারীদের অশেষ ধন্যবাদ ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File