হজ্জ এবং হজ্জের বাবস্থাপনা

লিখেছেন লিখেছেন রফিক খন্দকার ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২৪:০৬ রাত

সবাইকে ঈদ মুবারক। ঈদ নিয়ে পরে কথা বলব। এখন বালুর দেশের কাপুরুষ দের নিয়ে কথা বলি। এবার হজে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে অনেক। বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। ওই কাপুরুষ মানুষগুলো হয়ত আবারো কিছু তেল বিক্রি করা টাকা অফার করবে মানুষের সমালোচনা কিনে নেবার জন্য। এবারের এই মৃত্যুর মিছিল তাদের অব্যাবস্থাপনা এবং ভুলের ফসল। এই মানুষগুলো এমনি মানুষ যারা ডজন খানেক স্ত্রী রাখে আর ৮ম স্ত্রী হিসেবে নিজের মেয়েকে বিয়ে দেয়, সাথে দেয় সোনার টয়লেট গিফট। আমি ইহুদীদের যতটা না ঘৃণা করি কিন্তু এদের অনেক বেশি ঘৃণা করি। এদের কে আমার কোন কালেই মানুষ মনে হয় নি। ৭/ ৮ শ মানুষের পরিবার হারিয়েছে তাদের প্রিয়জনকে। টাকা দিয়ে পুণ্য কামাই করতে গিয়ে মৃত্যু আর যন্ত্রণা কিনে এনেছে। এই মৃত্যু গুলকে মহান মৃত্যু হিসেবে সম্মান করতে বলা হবে, কারন আরবদের সমালোচনা করা যাবেনা তাই। সব ধরনের সান্তনার ব্যাবস্থা আছে। সহজ সরল মানুষ গুলো তাই বিশ্বাস করে সান্তনা পাবে। কি দারুন ব্যাবস্থা !! সময় এসেছে এই সব কাপুরুষদের দিকে আঙ্গুল তুলে কথা বলার। হজের ব্যাবসায় ফুলে উঠেছে সৌদির অর্থনীতি। অথচ ব্যাবস্থাপনায় রয়েছে তাদের সীমাহীন গলদ। যার কারনে প্রান হারাচ্ছে অসংখ্য ধর্ম প্রান মানুষ।

এই শোকের ঢেউ আমার পরিবারেও আঘাত হেনেছে বেশ। আমার শাশুড়ি হজে গেছেন। উনার বয়স ৫৭, তার উপরে মহিলা মানুষ। কোন কারনে চাপে পরলে আর উঠতে পারবেন না। আমি যখন গরুর হাটে তখন এক লোককে ফোনে কথা বলতে শুনি যে হজে অনেক লোক মারা গেছে। বাসায় ফোন করে মিসেস কে জিজ্ঞেস করলে সেও একই কথা বলে। ইতিমধ্যেই আমার মিসেসের গলা শুখিয়ে গেছে। আমার কাছে প্রকাশ করছে না কিন্তু আমি বুজতে পারছি। শাশুড়িকে ফোন করা হচ্ছে কিন্তু উনার ফোন অফ। এভাবে চলতেই থাকে। আমার স্ত্রীর টেনশন হাজার গুনে বেড়ে যায়। কিসের ঈদ কিসের কি। এরকম অবস্থায় কিছু ভাল লাগে? বিকাল নাগাদ আমার মিসেস তার এক চাচাতো ভাইয়ের কাছে জানতে পারে, যে উনি আর আমার শাশুড়ি আলাদা হয়ে গেছেন কেউ কাউকে খুজে পাচ্ছে না, এক কথায় হারিয়ে গেছে। শঙ্কা এবার হাজারগুন বেড়ে যায়। তাহলে কি কিছু হয়েছে? আমি বাইরে আর আমার মিসেস নন স্টপ তার মাকে কল দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু ফোন অফ। একরকম বাসায় কান্নাকাটি চলছে । মা বলে কথা। আমি বাইরে থেকে তারাতারি বাসায় ফিরতে চেষ্টা করছি। আমি জানি আমার স্ত্রীর সহ্য ক্ষমতা কেমন। কোন খারাপ খবর হলে সাথে সাথে সেন্সলেস হয়ে পরে যাবে, আর একবার সেন্স হারালে প্রতি ১০ মিনিট পর পর অজ্ঞান হতেই থাকবে। আমি কোনটা সামলাবো ? এমন অবস্থায় সে মনে হয় একবার ফোনে পায় আমার শাশুড়িকে, উনি বলতে পেরেছেন "হেলো কে?"। ব্যাস, এই টুকু। এবার আমার মিসেস একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু শঙ্কা কাটেনা। সারা রাত সে কয়বার লাফিয়ে উঠেছে এই বলে যে" আম্মার ফোন আসছে" আর শাশুড়ি আমার ফোনেই কল দেয় সাধারণত। বাধ্য হয়ে ফোন তার বালিশের নিচে রাখি যেন সে রিসিভ করতে পারে। সে খুব করে চাচ্ছিল যে তার মা যেন বলে " আমি ভাল আছি" । অবশেষে আজ আমি কোরবানি দেবার পর সে তার মায়ের সাথে কথা বলতে সফল হয়। শাশুড়ি কান্নাকাটি করছে। তার নাকি ফোনে সমস্যা। তবে উনি বলছেন যে উনার শরীর ভাল নেই। বাকি টা উপরওয়ালা জানে। উনি সুস্থভাবে ফিরে আসতে পারবেন কিনা সেটা এখনো অনিশ্চিত।

সবার ঈদ ভাল কাটুক----------

বিষয়: বিবিধ

৮৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343504
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:০৩
হতভাগা লিখেছেন : রাজ রাজরাদের চলাফেরা হজের সময়ে বন্ধ রাখতে হবে । এটা সৌদি জনগনকেই করতে হবে ।

সারা বিশ্বের মুসলমান সৌদি আরবকে পুছে নবীজীর কারণে , ইসলামের অন্যতম একটা আহকাম আল্লাহর হুকুমে এখানে এসে পালন করতে হয় বলে । না হলে এদেরকে পাত্তা দেবার মত আসলেই কিছু আছে বলে মনে করি না ।

পেট্রো ডলারের কারণে এরা ভিনদেশী মডেলদের পাছা দেখতেই মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে । নোংরামীর শেষ সীমা মনে হয় এদের এই রাজ রাজরাদের কাজ কারবার ।

এরকম অপচয় করতে থাকলে সে দিন আর বেশী দূরে নয় যে একসময়ে তাদের থালা হাতে নিয়ে বসতে হবে ।
347162
২৫ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:০৩
রফিক খন্দকার লিখেছেন : দারুন বলেছেন। আমার শাশুড়ি ভালভাবে এসেছেন তবে দুরঘটনার দিন হারিয়ে গিয়েছিলেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File