প্রেক্ষিত ব্লগার হত্যাকান্ড, নেপথ্য কারণ কি?
লিখেছেন লিখেছেন বেরসিক কথক ১৭ আগস্ট, ২০১৫, ১২:০৩:০১ রাত
বাংলাদেশে ৭ আগস্ট নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নামে আরো একজন ব্লগার নিজ বাসায় দিনে দুপুরে খুন হলো। আহমেদ রাজিব হায়দার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫ জন ব্লগার বিভিন্ন সময়ে খুন হলো। এ হত্যাকান্ডের পেছনে ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীকে দায়ি করা হয়। কখনো আনসারুল্লা বাংলা টিম কিংবা কখনো আনসার আল ইসলাম নামে কোন সংগঠন এসব হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে কিংবা গণমাধ্যমে মেইল পাঠিয়েছে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত একটা হত্যাকান্ডেরও ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। মূলত নিহত এ পাঁচজন ব্লগারই মুক্তচিন্তার লেখক। তারা ধর্মকে নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ্যপূর্ণ যুক্তি উপস্থাপন করে লেখালেখি করে। আর মূলত সমস্যাটি সেখানেই। কারণ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে থাকে তাদের প্রায় ৯৯ ভাগেরও বেশি লোক তাদের ধর্মের বিষয়ে একটা সফট কর্ণার ধারন করে থাকে। তখন ১ভাগের ও কম সংখ্যক লোক যদি ধর্ম নিয়ে এমন অগ্রহণযোগ্য কটাক্ষ্যপূর্ণ সমালোচনা করে লেখালেখি করে তখন সেটা কেউই সহজভাবে নেবেনা। আমি এ ধরনের হত্যাকান্ডকে কখনো সমর্থন করিনা। সেইসাথে ধর্ম বিদ্বেষী এইসব নাস্তিক্যবাদী কুলাংগারদের কর্মকাণ্ডকেও সমর্থন করিনা। তারা ধর্ম মানেনা তারা নাস্তিক্যকে ধারন করে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে সেসব তাদের ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু ধর্মকে কটূক্তি না করে কি মুক্তচিন্তা করা যায়না? মুক্তচিন্তা আর মুক্তবুদ্ধির চর্চা কি কেবল ধর্ম নিয়ে যুক্তি দেখানোতে সীমাবদ্ধ?
ব্লগার রাজিব হায়দার 'থাবা বাবা' ছদ্মনাম ব্যবহার করে ব্লগে লেখালেখি করতো। যখন সে মারা যায় তখন তার ধর্মকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ এবং নোংরা অশ্লীল লেখাগুলো স্ক্রিনশটসহ বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিলো। সে তার লেখালেখিতে যেভাবে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (স.), ইসলামি আচার আচরণ ও আল্লাহকে নিয়ে নানারকম ধৃষ্টতাপূর্ণ লেখা পোস্ট করেছিলো তাতে ব্লগাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে এক ধরনের নেতিবাচক ধারনা তৈরি করে দিয়েছে। এখন মানুষ ব্লগার শুনলেই মনে করে লোকটি নাস্তিক। অর্থাৎ ব্লগার আর নাস্তিক এখন সমার্থক করে ফেলা হয়েছে। এভাবে হত্যাকারীর অবশ্যই বিচার হোক কিন্তু যারা ধর্ম নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ লেখালেখি করে ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠীকে আরো উগ্র করে তুলছে তাদেরকে অপরাধ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে সে জন্য কি উক্ত ব্লগারের কোন দায় নেই? গতকালকে যে ব্লগার নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় খুন হলো তারও লেখালেখির বিষয় ছিলো ধর্ম ও যুক্তি। তার লেখায়ও ইসলাম ধর্ম ও পবিত্রগ্রন্থ আল কুরআনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকবারই তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। ইসলাম ধর্বিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের প্রতিও তীব্রভাবে কটাক্ষ্য করা হয়েছে। তার বিভিন্ন লেখায় ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত দেয়ার মতো যথেষ্ট আলামত পাওয়া যায়। সুতরাং মুক্তচিন্তার মানেই ধর্মীয় সমালোচনা এমন বিকৃত চিন্তার ক্ষেত্র থেকে বের হয়েই ব্লগারদের লেখালেখি করা উচিৎ
বিষয়: বিবিধ
৭৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন