সত্যটা আর কবে বুঝবেন?
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১১ আগস্ট, ২০১৭, ০৪:৪০:৪০ বিকাল
এ দেশের রাজনীতির মাঠের শীর্ষ খেলোয়াড়দের পরিচিতি সবারই জানা, জানা আছে তাদের সক্ষমতা, সহজাত প্রবণতা আর অতীতের সাফল্য-ব্যর্থতার নাড়ি-নক্ষত্র। কিন্তু এই খেলোয়াড়দের অনেকেই তাদের দৃশ্যমান তৎপরতার সাথে পর্দার অন্তরালের অদৃশ্য খেলোয়াড়দের সাথে গোপন আঁতাতে ম্যাচ ফিক্সিং এর মতো দূরভিসন্ধিমূলক নানা নাটকীয়তার জন্ম দিতে সদা তৎপর। এরা কে যে কখন, কার জন্য কবর খুঁড়ে চলেছে তা বলা মুশকিল। তবে সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন, এদের কারণেই এ দেশে রাজনৈতিক মাঠে বৈরী হাওয়ার এতো দাপাদাপি, হাওর-বাঁওড় থেকে রাজধানী, গ্রাম থেকে নগর বন্দর সবখানে মানুষ অস্বস্তিতে থাকে, নষ্ট হয় স্থিতিশীলতা, ব্যাহত হয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতায় এরা কেউই নিষ্ঠাবান নন, রঙ্গিন নেশায় বিভোর হয়ে এরা যার যার অবস্থান থেকে অযৌক্তিক বাড়াবাড়ি করেই চলেছেন। অতীতেও অনেক জাতি ও সভ্যতার বিলুপ্তি কিংবা ধ্বংসের কারণ হয়েছে এদের মতো অসৎ রাজনৈতিক খেলোয়াড়দের মাঠের খেলায় প্রকৃত ভূমিকা পালনের ব্যর্থতা। এমন পরিস্থিতিতেই বিকল্প খেলোয়াড়ের খোঁজ পড়ে, মন্দের ভালো খুঁজতে গিয়ে বাদ পড়ে অনেক তথাকথিত প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড়। জাতি যেন আজ সেখানেই এসে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের ক্রান্তিকালে সামান্য ব্যর্থতাতেই মহাপ্লাবনের মতো ধেয়ে আসে ছাটাইয়ের বিপদ। বর্তমানে এ দেশের রাজনীতির অতীতের অনেক তারকা খেলোয়াড়ই তাদের পড়তি ফর্মের দুর্বলতা ঢাকতে গিয়ে পর্দার অন্তরালের অদৃশ্য খেলোয়াড়দের সাথে গোপন আঁতাতে ম্যাচ ফিক্সিং এর মতো দূরভিসন্ধিমূলক কর্মকান্ডে মেতে উঠেছে। কিন্তু অন্ধ বলে কি আর প্রলয় ঠেকানো যায়? একগুঁয়েমি, হটকারিতা আর অদূরদর্শীতাজনিত ধারাবাহিকতা প্রসূত পড়তি ফর্মের দায় কি আর এভাবে ঠেকানো যায় – পদস্খলনই যে এর অনিবার্য পরিণতি। রাজনীতিবিদের ভাষায়, রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি ও দুঃশাসনের খেসারত। দেশে বিদ্যমান সঙ্কট ঐ সকল পড়তি ফর্মের ব্যর্থ রাজনৈতিক খেলোয়াড়দেরই সৃষ্টি। তবে বর্তমানে রাষ্ট্রাচারকে ঘিরে ধরা ঐ রাজনীতিকদের সৃষ্ট সঙ্কট উত্তরণের সমাধান খুঁজতে হবে রাজনীতির ফর্মুলাতেই। এ ক্ষেত্রে অন্যায্য আস্ফালন এবং কাল্পনিক ক্ষমতার দম্ভ সমাধানের পথকে কণ্টকাকীর্ণই করবে, হারিয়ে যাবে যুক্তির ভাষা। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যর্থতায় জন্ম নিবে নতুন কোন হঠকারিতা। এ জন্যই বলা হয়, রাজনৈতিক বাড়াবাড়ির উদর থেকে যে সঙ্কট জন্ম নেয়, তার উত্তরণ রাজনৈতিক দাওয়াই দিয়েই করতে হয়। সমঝোতার যৌক্তিক রাজনীতিতে ফিরে এলেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সহনীয় হয়ে উঠবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতাই পারে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে জমতে থাকা অনিশ্চয়তার ঘনঘোর অন্ধকারের ভেতর আশার আলো ফুটাতে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই বিবেচনায় নিতে হবে দল ও জোট ভাঙা-গড়ার নেপথ্যে এখন অনেক লবি সক্রিয়। রাজনীতির মাঠে এখন দৃশ্য-অদৃশ্য অনেক খেলোয়াড়। সবার গোলপোস্ট একমুখী না হলেও ক্ষমতার রাজনীতিতে অংশগ্রহণের জন্যই মূলত এই প্রতিযোগিতা। পুরাতন খেলোয়াড়দের বদলি হিসেবে মাঠে নামতে চাইছে অনেকেই। রাজনীতির খেলার মাঠে নিজ নিজ অবস্থানকে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত ও সুনিশ্চিত করতে চাইলে প্রাধান্য দিতে হবে সমঝোতার মতো মসৃণ পথটিকেই। নইলে কখন, কিভাবে সবকিছু থেকে নির্বাসিত হয়ে নিজেকে আবিষ্কার করতে হবে অপাংক্তেয়, পরিত্যক্ত আর অপ্রয়োজনীয় হিসেছে তা ক্ষণিক আগেও অনুমান করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, নিজের চার দিক থেকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার দেয়াল খাড়া করার কোনো মরিয়া প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয়। হ্যাঁ, ম্যাডাম জিয়া – আমার এতো কথা শুধু আপনার জন্যই। নিজের চারিপাশে যে তাশের প্রাসাদ গড়েছেন তা এবার ভাঙ্গল বলে। দলের ক্ষমতালিপ্সু নেতৃত্বের কাছে আপনার নির্মম বলী এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখনও সময় আছে সতর্ক হোন, একগুঁয়েমি আর অযৌক্তিক দাবি ছেড়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণে সরকারের সাথে সমঝোতা করুন। তাহলেই রক্ষা পেতে আপনার অস্তিত্ব। নিজ দলের কাছেই আপনি এখন ছাটায়ের তালিকায় থাকা পড়তি ফর্মের অপ্রয়োজনীয় খেলোয়াড়। সত্যটা আর কবে বুঝবেন?
বিষয়: বিবিধ
৫৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন