সূর্যালোকেই সমাধান
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০২ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৪:৪৮:২৪ বিকাল
দেশে বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় ৮০ হাজার পরিবারের ঘরে সোলার প্যানেল বসানোর কাজটি চলমান। যেখানে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি নেই সেখানে গৃহস্থ ও কিষান বাড়ির ঘরের চালায় অথবা ইটের বাড়ির ছাদে সূর্যের আলো ধরে রাখার প্যানেল স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অনেক ক্ষেত্রে আবাদী জমির ধারে প্যানেল বসিয়ে সৌর বিদ্যুতে সেচের কাজও চলছে। সব মিলিয়ে সৌর বিদ্যুতের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সময়োপযোগী নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে সরকার। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় বিগত সাত বছরে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হয়েছে। ঢাকার লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে পৌঁছানোর পাশাপাশি দেশের বহু জেলায় গ্রাম পর্যায়ে নতুন করে বিদ্যুৎ বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ বর্তমানে বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় এসেছে। কিন্তু সৌর বিদ্যুতেও যে দেশ এগিয়ে চলেছে, নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে সেটা জানে না দেশের বহু মানুষ। উল্লেখ্য, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বাধ্যবাধকতা থাকায় ঢাকার গ্রাহক সোলার প্যানেল বসালেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার পর সেই সৌর প্যানেল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অব্যবহৃত থাকছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ডিপিডিসির প্রাথমিক জরিপে বেরিয়ে এসেছে বাসাবাড়ির ছাদে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বসানো সোলার প্যানেলের ৭০ শতাংশই অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই মারাত্মক অপচয় থেকে বেরিয়ে আসতে সরকার সোলার প্যানেলকে অফ গ্রিড থেকে অন গ্রিডে রূপান্তরের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য গ্রাহকের আঙ্গিনায় ইনভারটার বসিয়ে সৌর প্যানেলের বিদ্যুৎ গ্রিডের বিদ্যুতের সাথে একই সঙ্গে ব্যবহার উপযোগী করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় গ্রাহক সূর্যের আলো থাকা সাপেক্ষে গ্রিডের বিদ্যুতের সঙ্গে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবে, তবে নিজস্ব প্রয়োজন না থাকলে সৌর বিদ্যুৎ গ্রিডে গিয়ে যোগ হবে - এতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক উল্টো অর্থ পাবেন। অর্থাৎ ডিপিডিসির কাছে ঐ বিদ্যুৎ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিক্রি হয়ে যাবে। সৌর বিদ্যুতে প্রণোদনা প্রদান এখন সময়ের দাবি। সোলার প্যানেল বসানোর সরঞ্জাম এবং স্থাপনা ব্যয় এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এই খাতে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্যও বিজ্ঞানীদের উৎসাহী করে তোলা চাই। দেশে সময়োপযোগী প্রযুক্তির ব্যবহারে সাশ্রয়ী মূল্যে সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হলে সেটি হবে বড় ধরনের সাফল্য। এই কারণেই সম্ভাবনাময় এই খাতে প্রণোদনা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, যাতে এই বিনিয়োগ থেকে স্থায়ীভাবে প্রাপ্তি ঘটে। এর ফলে ব্যক্তি, পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মিটিয়ে এই সৌর বিদ্যুৎ গণমানুষের ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা যাবে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেশের মানুষের মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্রদানের এই সময়োপযোগী উদ্যোগ নিশ্চিত করবে দেশের কল্যাণ – সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা হবে অব্যাহত। সূর্যালোকেই সমাধান হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের বৈশ্বিক চাহিদা – আর এতে অগ্রদূতের ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ, এটাই প্রত্যাশা।
বিষয়: বিবিধ
৮০০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন