সময় গেলে সাধন হবে না
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:২৭:১৪ দুপুর

উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতার অভাবে চাষ প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন না হওয়াতে আন্তর্জাতিক বাজারে রাবারের দাম কমলেও দেশে রাবার উৎপাদনের খরচ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত রাবার অপেক্ষা আমদানি মূল্য কম হওয়ায় স্থানীয় রবারের চাহিদা ও ব্যবহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশীয় রাবার শিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে ২০১৪ সালে প্রতি কেজি রাবারের দাম ১২০-১৩০ টাকা থাকলেও বর্তমানে প্রতি কেজি রাবার বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। অথচ দেশীয় বাগানগুলোয় উৎপাদিত রাবার প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রির উপযোগী করতে খরচ পড়ে প্রায় ১৬০ টাকা। রাবার আমদানিতে বর্তমানে সব মিলে ২২ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করার পরেও দেশের উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিদেশ থেকে আমদানি করা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে আশির দশকে "সাদা সোনা' হিসেবে পরিগণিত রাবার শিল্পের বর্তমান অবস্থা খুবই করুণ। বর্তমানে দেশে রাবারের বার্ষিক চাহিদা ২৫ হাজার টন, প্রতিবছর এই চাহিদা ৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। দেশে বছরে উৎপাদিত হয় ২৪ হাজার টন রাবার। কিন্তু তারপরও মূল্য পার্থক্যের কারণে স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং শিল্প মালিকেরা এখন দেশীয় রাবার কিনছেন না। উৎপাদিত রাবারের ৬০ শতাংশ দেশীয় উদ্যোক্তারা কিনছেন, বাকি ৪০ শতাংশ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আভ্যন্তরীন বাজারে বিক্রি না হওয়ায় এখন দেশীয় রাবার উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিদেশে রপ্তানি করতে হচ্ছে।এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন রাবার বাগান মালিকরা। বর্তমানে ব্যবহার বাড়ায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পণ্যে রাবার ব্যবহৃত হচ্ছে। রাবার দিয়ে প্রধানত গাড়ির চাকার টায়ার, টিউব, জুতার সোল, স্যান্ডেল, ফোম, রেক্সিন, হোসপাইপ, গাম, খেলনা, কারখানার পণ্য সামগ্রী, চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। রাবার চাষ কৃষিভিত্তিক প্রকল্প হলেও একে শিল্প হিসেবে গণ্য করা হয় ফলে কৃষি খাতের সুবিধাগুলো এই শিল্প পায় না। দেশের রাবার খাতের বিদ্যমান অশনিসংকেত দূর করে এর ভবিষ্যত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে একে কৃষিভিত্তিক শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
৮০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন