###একজন তনুশ্রীর আত্মকাহিনী (((পরিমার্জিত,নতুন সংস্করন)))
লিখেছেন লিখেছেন নান্দিনী ১৮ মার্চ, ২০১৫, ০৮:৫৬:১৬ রাত
রাত ১২.০৫
----------------------------------------
নিস্তব্ধ রাত,নিস্তব্ধ বললে ভুল ই হবে,রাতের এই নিকশ কালো অন্ধকারের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে মৃদু-মন্দ দখিনা বাতাস।
রাত যতো গভীর হয়,রাতের সৌন্দর্য ততো বৃদ্ধি পায়।সন্ধ্যা রাতের সৌন্দর্য হার মানে মধ্যরাতের কাছে,আবার মধ্যরাতের সৌন্দর্য হার মানে শেষরাতের কাছে।শেষ রাতের গভিরতা অনেক তীব্র হয় ।
আকাশে আজ দ্বাদশীর চাঁদ,থালার মতো রুপালি চাঁদ,এই চাঁতকে কবি তুলনা করেছেন রুটির সাথে,
"ক্ষিদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়,
পূর্ণিমার চাঁদ যেনো ঝলসানো রুটি"
আকাশে এমন থালার মতো রুপালি চাঁদ উদয় হলেই তনুর মনে একটা প্রশ্ন উদয় হয়,চাঁদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে চাঁদকে কবি "ঝলসানো রুটির" সাথে তুলনা করেছেন,যদিও চাঁদের ঝলসানোর ক্ষমতা নাই,ঝলসানোর ক্ষমতা আছে সূর্যের।
প্রশ্ন হলো, সূর্যকে তাহলে কিসের সাথে তুলনা করা চলে?তনু এর উত্তর পায় না কখনো ।কিন্তু আজকে এই দ্বাদশীর চাঁদ দেখে তনুর কোনো অনুভূতিই হচ্ছে না । নিস্তব্ধ রাতের এই অপরূপ সৌন্দর্য আজ আর তনুর মনে একটুও দাগ কাটছে না ।
রাতের এই আকাশ,মৃদু-মন্দ বাতাস,রুপালী চাঁদ সব কিছু ছাপিয়ে তনুর মনে বাঁজছে এক নিদারুন বেহালার সুর !
তনু স্মৃতি হাতরাচ্ছে আজ থেকে বেশ কিছুদিন আগের হৃদয় স্পর্শি কিছু মুহূর্তে । যা তাকে শিহরীত করেছিলো,আলোড়ন তুলেছিলো তার মনে ।
যদিও প্রেমের প্রথমার্ধে তনুর কোনো সায় ছিলো না,কিন্তু নিবীড়,নিবীড় ভাবেই অনেক যত্নের সাথে ভালোবাসার রঙ্গিন ডালি নিয়ে উপস্হিত হয়েছিলো তনুর সম্মুখে,তনু শেষ পর্যন্ত ফেরাতে পারেনি,প্রায় প্রতিটা মেয়েই হয়তো প্রেমের ক্ষেত্রে প্রথমে সায় দিতে চায় না,কিন্তু একটা সময় আর পারে না,কারনটা হয়তো মেয়েদের কোমল হৃদয় আর আবেগ,হয়তো বললাম এই কারনে যে মানুষ হিসেবে "পাষান হৃদয়" বলে মেয়েদেরও একটা হৃদয় থাকে,আর এই পাষান হৃদয় টা একদিনে বা হঠাত্ করে হয় না,কালক্রমে ঠকতে ঠকতে একটা সময় তা পাষান হৃদয়ে পরিণত হয় ।তনুও ঠকেছে,নিবীড়ের কাছে ।
তনুর বার বার একটাই আকুতি ছিলো নিবীড়ের কাছে,"আমার বেশি কিছু চাওয়ার নেই"
নিবীড় : কেনো চাওয়ার নেই? কে মানা করলো চাইতে?
তনু : কেউ মানা করে নি
নিবীড় : তো?
তনু : আমার প্রশান্তি চাই,দিন শেষে তোমার বুকে একটু মাথা গুজার সুখ চাই,সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলে আবার নতুন উদ্যামে বাঁচতে চাই,খুব ভালোবাসার দরকার নেই আমার ; নিশ্চয়তা,নির্ভরশীলতা হলেই চলবে,তারমানে এই না যে তুমি আমাকে ভালাবাসাহীন রাখবে,এটাতো হবে আমার প্রতি তোমার চরম অবহেলা,আর জানেই তো খুব ভালোবাসার কাছের মানুষের অবহেলা মানুষ সইতে পারে না ।
এক নাগারে কথাগুলো বলে গেলো তনু
নিবীড় : আমি আমার সবটুকু সাধ্য দিয়ে,ভালবাসা দিয়ে তোমাকে আমার অর্ধাঙ্গি হিসেবে পরম নিশ্চয়তা দিবো,যা প্রতিটি নারীরই কাম্য,প্রতিটি পুরুষের কাছে,নিশ্চয়তা,বিশ্বাস,আশ্বাস,পরম ভরসা মূখ্য,আর তবেই তো ভালোবাসা হবে পূর্ণ ।
তনু : আমাকে পূর্ণ করো,শিক্ত করো তোমার পরম সেই ভালোবাসায় ।
তনু ভাবছে,আজ সবই স্মৃতি,শুধুই স্মৃতি,নিবীড় আজ দূরের ঐ আকাশটার মতো,আকাশের কাছ থেকে একমুঠো নীল পাওয়ার আশা করা যেমন শুধুই দূরাশা,তেমনি নিবীড়ের কাছ থেকে পূর্ণতা পাওয়ার আশা করাও শুধুই দূরাশা ।
এখনও নিবীড় একজন পুরুষ মাত্র,মাংসাশী পুরুষ !
(চলবে)
--------o-------
বিষয়: বিবিধ
১১৬৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যদি আসে কোন দিন সেই সুখ পাখি
এই চেয়ে থাকা প্রাণে সয় না
সবাইতো সুখী হতে চায়
কেউ সুখী হয়য় কেউ হয় না!
লেখক সাহেব এটা আপনার জীবনে থেকে ফুড়ুৎ চলে যাওয়া প্রিয় জিনিসটার গল্প উল্টো করে বর্ণনা নয়ত?
মন্তব্য করতে লগইন করুন